পাবনায় বুদ্ধিজীবী দিবসে মাত্র তিন সংগঠনের শ্রদ্ধার্ঘ্য
বিনম্র শ্রদ্ধায় পাবনায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এ দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পাবনায় তেমন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মাত্র তিনটি সংগঠন দুর্জয় পাবনা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছে। দেখা যায়নি তরুণদেরও। এ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে সংস্কৃতি কর্মী ও সচেতন মহল।
সকালে শহরের দুর্জয় পাবনা স্মৃতিস্তম্ভে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় পাবনা প্রেসক্লাব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। এ সময় নিরবতা পালন করে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের অবদান স্মরণ করা হয়। তবে জাতির সূর্যসন্তানদের আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক দিনটি পালনে বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক পেশাজীবী সংগঠন শ্রদ্ধা জানাতে না আসায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন আগতরা।
পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, জাতিকে মেধাশূন্য করার নীল নকশায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ঠিক আগে বেছে বেছে এদেশের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক, শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, আইনজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এর পাশাপাশি পাবনাতেও মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে জেলার মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে নির্যাতন করে হত্যা করে। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের স্মৃতি ধরে রাখতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। নতুন প্রজন্ম শহীদদের অবদান সম্পর্কে জানে না বললেই চলে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার।
সাংস্কৃতিক কর্মী ভাস্কর চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে জাতি গুণীর কদর করে না, সেখানে গুণী জন্ম নেয় না। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যে অনীহা প্রদর্শন করা হচ্ছে তা আমাদের অকৃতজ্ঞতার পরিচয় বহন করে। লজ্জাজনকও বটে। মাত্র তিনটি সংগঠনের কর্মীরা পাবনায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে। এটি খুবই দুঃখজনক।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মী আলমগীর কবীর হৃদয় বলেন, নতুন প্রজন্মকে যদি আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস, শহীদদের ত্যাগ তিতীক্ষা সম্পর্কে জানাতে না পারি তাহলে আমরা কখনোই সামনে এগিয়ে যেতে পারবো না। প্রশাসন থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে এবার বুদ্ধিজীবী দিবস পালনে তেমন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এটি কাম্য নয়। স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে না পারলে তারা পূর্বসূরীদের আত্মত্যাগ সম্পর্কে জানতেই পারবে না। এ বিষয়ে সবার সচেতন হওয়া জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি ও পাবনা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলমগীর হোসাইন নাবিল/এফএ/এএসএম