বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
১০ শতক জায়গাসহ ঘর পাচ্ছে শহীদ রাসেলের পরিবার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রাসেল মিয়ার (১৯) পরিবারকে জমিসহ ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১০ শতক সরকারি জমিতে একটি আধাপাকা ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাসেল মিয়ার মা কুলসুমা আক্তারের হাতে জমির দলিল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন নিহত রাসেল মিয়ার কবর জিয়ারত করেন।
এ সময় ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন, জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, জেলা পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ, জেলা সিভিল সার্জন অনুপম ভট্টাচার্য, বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি, প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. শিহাব উদ্দিন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উবায়দুল্লা খান, সমাজসেবা অফিসার এসএম গোলাম হোসাইন, নেত্রকোনা জেলা সমন্বয়ক শেখ হাসনাত জনি, বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তালুকদার, বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ আলম ফকির, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল বাসির, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদর উপজেলার ফাহিম পাঠান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাসেল মিয়া নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের সুসং ডহরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের মো. মুন্সি মিয়া ও কুলসুমা আক্তার দম্পতির তৃতীয় সন্তান। গাজীপুরের মাওনায় মুরগিবাহী একটি কাভার্ডভ্যানের সহকারী ছিলেন তিনি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ভূমিহীন রাসেল মিয়া পরিবারের অভাব দূর করতে কিশোর বয়স থেকেই কাজে যোগ দেন। তার আয়ে চলতো চার সদস্যের পরিবার। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট গুলিতে নিহত হন তিনি। নিজেদের ভিটেমাটি না থাকায় রাসেলের মরদেহ দাফন করা হয় তার চাচার জমিতে।
ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বুধবার বিকেল ১০ শতক জমিসহ প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে একটি আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় কমিশনারের তহবিল থেকে নগদ এক লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
রাসেলের মা কুলসুমা আক্তার বলেন, ছেলেকে হারিয়েছি। তাকে আর কখনো ফিরে পাবো না। সে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, এটা আমার গর্ব। আমি চাই আমার ছেলেসহ যারা আন্দোলনে শহীদ হয়েছে তাদের যেন শহীদের মর্যাদা দেওয়া হয়। আমার আরেক ছেলে আছে তাকে যেনো একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। আমারে জমি ও ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়াতে প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, রাসেলের পারিবারের দুরবস্থার বিষয়টি জেনে তার পরিবারের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি কমিশনার স্যারের পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ টাকাসহ পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হবে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার হোসেন, ছাত্র আন্দোলনে নেত্রকোনায় যে ১৭ জন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে রাসেল মিয়ার পরিবারটি হত দরিদ্র। তাদের নিজস্ব কোনো জমিঘর না থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ শতক জমি ও একটি আধা পাকা ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।
এইচ এম কামাল/আরএইচ/এমএস