বরাদ্দের ৩৫ ঘরের মধ্যে ১১টিতেই থাকে না কেউ

এম মাঈন উদ্দিন
এম মাঈন উদ্দিন এম মাঈন উদ্দিন , উপজেলা প্রতিনিধি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ১১:৫১ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের রসূলপুর আবাসন প্রকল্পে ৩৫টি ভূমিহীন পরিবারকে দেওয়া ঘরে থাকে না ১১টি পরিবার। দীর্ঘদিন ঘরে না থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। এতে করে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

স্থানীয়দের দাবি, জনপ্রতিনিধিরা স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ঘর বরাদ্দ দেওয়ায় অনেক প্রকৃত ভূমিহীন বরাদ্দ পায়নি। যেসব পরিবার থাকে না তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের দেওয়ার দাবি জানান স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২১ মার্চ মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের রসূলপুর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৩৫টি পরিবারকে দেওয়া হয় সরকারি ঘর। দুই শতাংশ জমিসহ এসব আধাপাকা ঘরে রয়েছে একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও দুইটি শয়নকক্ষ। এছাড়া একটি বারান্দা রয়েছে।

বরাদ্দের ৩৫ ঘরের মধ্যে ১১টিতেই থাকে না কেউ

সরেজমিনে রসুলপুর আবাসন-২ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ৩৫টি পরিবারের মধ্যে ১১টি নেই। এসব ঘরের দরজায় তালা দেওয়া। কেউ না থাকায় ঘরগুলোর বারান্দায় জমেছে ময়লা। এদের মধ্যে ৭ নম্বরের মীর হোসেন ও ৩২ নম্বর ঘরের মালিকরা বরাদ্দের পর আসেননি বলে জানান স্থানীয়রা।

রসুলপুর আবাসন-২ প্রকেল্পর বাসিন্দা বৃদ্ধ এরশাদ উল্ল্যাহ বলেন, এখানে অনেক পরিবার আছে যারা বরাদ্দ পাওয়ার পর একদিনের জন্যও আসেনি। আবার অনেকে রয়েছে যারা কিছুদিন থেকে চলে গেছে। যেসব পরিবার ঘরে থাকে না তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

আরও জানা গেছে, ৩৫টি পরিবারের মধ্যে ২টি রয়েছে হিন্দু পরিবার। তাদের একজন বলরাম। বলরামের পরিবার বরাদ্দ পাওয়ার পর বেশ কয়েক মাস ছিল। কিন্তু গত প্রায় ৮ মাস তারা আর আসেন না। এ বিষয়ে জানতে বলরামের মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনা মিয়া দলীয় বিবেচনায় অনেকের কাছে জায়গা থাকার পরও তাদের ভূমিহীন দেখিয়ে ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন। তার স্বজনপ্রীতির কারণে এমন অনিয়ম হয়েছে বলে জানান তারা।

বরাদ্দের ৩৫ ঘরের মধ্যে ১১টিতেই থাকে না কেউ

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আবাসন প্রকল্পের এক নারী বাসিন্দা বলেন, যেসব পরিবার থাকে না তাদের নাম লিখে রেখেছি। এখনো অনেক গৃহহীন পরিবার রয়েছে, যারা প্রায় সময় এখানে আসে ঘরের জন্য। যারা প্রকৃত গৃহহীন। প্রশাসনের উচিত বরাদ্দ পাওয়ার পরও যে পরিবারগুলো থাকে না তাদের ঘরগুলো অন্যদের দেওয়া।

হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনা মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, আমরা যখন ঘর বরাদ্দ শুরু করি তখন বিভিন্ন জন এসে কান্নাকাটি করে। যারা ঘরে থাকে না তাদের পরিবারের নামগুলো আমাকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন। প্রয়োজনে ওই সকল পরিবারের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন পরিবারকে দেওয়া হবে।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।