সেন্টমার্টিনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করবে প্রাণ-আরএফএল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যবসায়িক কার্যক্রমের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষা নিয়েও কাজ করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। এজন্য ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এই প্ল্যাটফর্ম পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে জীবন-জীবিকা, ব্যবসা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে টেকসই করতে কাজ করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেলেদের অর্থনৈতিক সুরক্ষায় তাদের সংগৃহীত সামুদ্রিক মাছ ও শুঁটকি প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের রিটেইল চেইন শপে ‘সেন্টমার্টিন এক্সক্লুসিভ’ নামে একটি কর্নারে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংয়ের মাধ্যমে দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এক কথায় দ্বীপের প্রতিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় ‘প্রাণ’ হয়ে থাকতে চায় গ্রুপটি।

বিজ্ঞাপন

সেন্টমার্টিনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করবে প্রাণ-আরএফএল

এজন্যই সেন্টমার্টিন সুরক্ষায় যৌথভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণ-আরএফএল ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সেন্টমার্টিনের ডেইল পাড়ায় কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মুহাম্মদ সোলায়মান হায়দার। এই কার্যক্রমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেন্টমার্টিন: পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই অর্থনীতি’।

সোলায়মান হায়দার বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটক যাতায়াত, অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ, পরিবেশ দূষণ, পর্যটকদের অসচেতনতার কারণে এখানকার পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দ্বীপ রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণ-আরএফএল ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। সবার সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমেই কেবল সেন্টমার্টিন বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।

সেন্টমার্টিনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করবে প্রাণ-আরএফএল

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, পণ্য প্রস্তুত ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামুদ্রিক ব্লু ইকোনমি রক্ষা, সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই অর্থনীতি নিশ্চিতে সহায়তা করতে ইউএনডিপির সঙ্গে আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কর্মসূচির অধীনে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের স্বেচ্ছাসেবীরা সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করবেন। এরপর সেগুলো দ্বীপের নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে আসবেন। বর্জ্যগুলো যন্ত্রের মাধ্যমে সংকুচিত করে সমুদ্রপথে টেকনাফে আনা হবে। এরপর নিজস্ব পরিবহনে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও ডাঙ্গা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে রিসাইক্লিং প্ল্যান্টে নিয়ে আসার পর সেখানে রিসাইক্লিং করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ উদ্যোগের অধীনে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ দূষণকারী বর্জ্য সংগ্রহ করা হবে। এরপর এসব বর্জ্য রিসাইক্লিং করা হবে। এছাড়া দ্বীপের মানুষের জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনে সহায়তা করা হবে। এর পাশাপাশি এ উদ্যোগের আওতায় দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য থাকবে সুপেয় পানি। জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে নানান ধরনের কর্মসূচি এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দ্বীপে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

সেন্টমার্টিনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করবে প্রাণ-আরএফএল

বিজ্ঞাপন

ইউএনডিপির হেড অব এক্সপেরিমেনটেশন ড. রমিজ উদ্দিন বলেন, টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতে ইউএনডিপি সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। ইউএনডিপি দ্বীপে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করতো। এখন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ যুক্ত হওয়ায় এ কাজের গতি আরও বাড়বে। এজন্য ইউএনডিপির পক্ষ থেকে প্রাণ-আরএফএলকে ধন্যবাদ জানাই। গ্রুপটি দ্বীপের মানুষের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নে আরও ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।

এর আগে পরিবেশে দূষণরোধে দ্বীপবাসী ও পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে বিচ ক্লিনিং কর্মসূচি পালন করা হয়। সোমবার সকালে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ ও মাই সেন্টমার্টিনের সহযোগিতায় এ আয়োজনে পর্যটক ও দ্বীপের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

অংশগ্রহণকারীরা সেন্টমার্টিন দ্বীপের জাহাজ ঘাট থেকে শুরু করে দ্বীপের পশ্চিম বিচ পর্যন্ত সৈকতে পড়ে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করেন। সচেতনতা তৈরির জন্য র‍্যালি, লিফলেট বিতরণ এবং স্থানীয় লোকজনকে এই কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সেন্টমার্টিনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করবে প্রাণ-আরএফএল

বিচ ক্লিনিং অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় বর্জ্য উৎপাদন কমানো, নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলা, নিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথক করা ও প্রক্রিয়াকরণের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য বিদ্যমান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী ও উন্নত করার মাধ্যমে ‘শূন্য বর্জ্য’ ধারণা বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিচ ক্লিনিং ও উদ্বোধনী কর্মসূচিতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব করপোরেট ব্র্যান্ড নুরুল আফসার, হেড অব সাসটেইনেবিলিটি সুমাইয়া তাবাসুম আহমেদ, ইউএনডিপির ডেটা অ্যানালিটিকস কর্মকর্তা আহমেদ উল্লাহ কবির, সেন্টমার্টিন ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান এবং মাই সেন্টমার্টিনের আয়াত উল্লাহ খামেনী, আবদুর রহিম জিহাদী, এম এ তাহের শাহীন, হাবিবুর রহমান মেম্বার, ছৈয়দ আলম মেম্বার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সায়ীদ আলমগীর/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।