দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ
ফিল্ম না থাকায় বন্ধ এক্স-রে-সিটিস্ক্যান, এমআরআই মেশিন নষ্ট
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিল্ম না থাকায় আড়াই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে এক্স-রে ও সিটিস্ক্যান সেবা। নষ্ট হয়ে পড়ে আছে এমআরআই মেশিন। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিক থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে এসব পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, আড়াই মাস ফিল্ম নেই দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে। সে কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও বহির্বিভাগে আসা রোগী ও বাইরে থেকে এক্স-রে ও সিটিস্ক্যান করতে আসা রোগী ও স্বজনদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এতে চিকিৎসা ব্যয় হয়রানি বেড়েছে।
হাসপাতালের একজন মেডিকেল টেকনিশিয়ান ও রেডিওগ্রাফি বলেন, হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন ও সিটিস্ক্যান মেশিন বেশ ভালো মানের। কিন্তু ফিল্মের অভাবে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে এ দুই সেবা বন্ধ রয়েছে। ফিল্ম কবে হাতে পাওয়া যাবে সেটি নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ রোগীর এক্স-রে, সিটিস্ক্যান ও এমআরআই হতো এ হাসপাতালে।
ওই টেকনিশিয়ান আরও বলেন, হাসপাতালে এক্স-রে করতে দুই রকম ফিল্ম ব্যবহার করা হয়। ছোট ফিল্ম ১৫০ টাকা ও বড় ফিল্ম ২০০ টাকা। যার যত ফিল্ম রাতে তার তত খরচ হয়। কিন্তু এ একই ফিল্ম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একেকটি ফিল্ম ৫০০ টাকা দিতে হয়।
সিটিস্ক্যান তিন ধরনের হয়ে থাকে। যার সরকারি রেট দুই হাজার, আড়াই হাজার ও চার হাজার টাকা। এটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যথাক্রমে পাঁচ হাজার, সাত হাজার ও দশ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। এসব যন্ত্র চালু করলে কম খরচে এখানকার মানুষ পরীক্ষা করাতে পারতেন।
সদর উপজেলার শংকরপুর গ্রাম থেকে আসা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বুকের ব্যথার জন্য তিনি বহির্বিভাগে টিকেট কেটে ডাক্তার দেখানোর পর তার বুকের এক্স-রে করার এডভাইজ করেন চিকিৎসক। তিনি হাসপাতালে এক্স-রে করার জন্য কাউন্টারে টাকা জমা দিতে গেলে দেখেন ক্যাশ কাউন্টারে সাদা কাগজে প্রিন্ট করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এক্স-রে ফিল্ম নেই। এক্সরে বন্ধ। এতে বাধ্য হয়ে তিনি বাইরে বেশি টাকায় এক্স-রে করেছেন।
হাসপাতালে ভর্তি একাধিক রোগী বলেন, হাসপাতালে এক্স-রে করাতে এক ফিল্মে ২০০ টাকা লাগলেও বেসরকারি ক্লিনিকে ৫০০-৬০০ টাকা লাগে। যাদের একাধিক ফিল্ম লাগে তাদের আরও বেশি ব্যয় হয়ে থাকে। তাছাড়া হাসপাতালে উন্নত মানের মেশিন থাকলেও বাইরের মেশিনগুলো এতো উন্নত নয়।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান বলেন, গত অর্থ বছরে দরপত্রের মাধ্যমে যে ফিল্ম কেনা হয়েছিল সেটি শেষ হয়ে গেছে। সে কারণে এক্স-রে, সিটিস্ক্যান বন্ধ। নতুন দরপত্র গৃহীত এবং অনুমোদন হলে ফিল্ম পাওয়া যাবে। এমআরআই মেশিন আমি আসার আগে থেকেই নষ্ট।
এমদাদুল হক মিলন/আরএইচ/জিকেএস