আমনের বাম্পার ফলনে ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব
দিগন্ত বিস্তৃত আমনের ক্ষেত, সোনামাখা রোদে মাঠে মাঠে ঝলমলিয়ে উঠছে সোনালি ধান। সেই ধানের ঝিলিক যেন ছড়িয়ে পড়েছে লালমনিরহাটের কৃষকদের চোখেমুখে। জেলার ৫ উপজেলায় চলতি মৌসুমের অগ্রহায়ণ মাস জুড়ে আমন ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলার উৎসব চলছে।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রোগবালাই ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলনে কৃষকের মুখে যেন হাসির ঝিলিক। বাজারে ১২শ থেকে সাড়ে ১২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ধান। এ বছর প্রতি বিঘায় ২৫ থেকে ৩০ মণ ধান পাওয়ার আশা কৃষকদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফসলের মাঠজুড়ে কিষাণ-কৃষাণী ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমন ধান ঘরে তোলা, মাড়াই, সিদ্ধ ও শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসবের আমেজ।
কৃষকরা বলছেন, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে উৎপাদন খরচ। অন্যান্য বছরের তুলনায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পোকামাকড়ের আক্রমণও কম। ফলে এ বছর ভালোই ফলন হয়েছে। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করি এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। জেলায় ৮৬ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এ বছর তা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এ পর্যন্ত জেলায় ৯০ ভাগ ধান কর্তন হয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার নিজ শেখ সুন্দর গ্রামের আকবর আলী বলেন, এই এলাকায় রাস্তাঘাট না থাকায় আমাদের প্রতিবছর আমন ধান পরিবহনে বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে।
সদর উপজেলার কৃষক মহসিন আলী বলেন, বাজারে দিন দিন সার কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের কাছে জোর দাবি, যেন সারের মূল্য কমিয়ে দেয়।
হাতীবান্ধা উপজেলার কৃষি অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই ফলনের মধ্য দিয়েই আর্থিকভাবে লাভবান হবেন কৃষকরা।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো. সাইফুল আরিফিন বলেন, এ বছর জেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর পোকামাকড় আক্রমণ কমই দেখা গেছে। আমাদের কৃষি অফিসাররা প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকদেরকে আধুনিক চাষ আমাদের জন্য সহযোগিতা করে আসছে। পাশাপাশি কৃষকরা ধানের ভালো দামও পাচ্ছেন।
রবিউল হাসান/এফএ/এএসএম