কলেজ ভবন নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ, দেওয়াল ভেঙে দিলেন স্থানীয়রা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০৭:০০ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চৌরঙ্গী মহাবিদ্যালয়ে আধাপাকা ভবন নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় নির্মাণাধীন দেওয়াল ভেঙে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, ভবন নির্মাণে নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। সিমেন্ট-বালুও পরিমাণ মতো দেওয়া হচ্ছে না। এসব অনিয়মের কারণে দুই সপ্তাহ আগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা। বুধবার আবার একইভাবে কাজ চলছিল। সেজন্য স্থানীয় কিছু ছেলেরা দেওয়াল ভেঙে দিয়ে চলে গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, কলেজের খেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে বালু, সিমেন্ট লাগানো ভাঙা দেওয়ালের ইটগুলো পড়ে আছে। কয়েকজন শ্রমিক যন্ত্রপাতি ধোয়ামোছার কাজ করছেন।

মিস্ত্রি রাশিদুল বলেন, সকাল থেকে তারা ভবনের দেওয়াল নির্মাণের কাজ করছিলেন। হঠাৎ বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তিনটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন যুবক এসে তাদের দেওয়াল ভেঙে দিয়ে চলে যান। তিনি কাউকে চিনতে পারেননি।

কলেজ ভবন নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ, দেওয়াল ভেঙে দিলেন স্থানীয়রা

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন শ্রমিক বলেন, এক, দুই, তিন নম্বরসহ সব ধরনের মালামালই আছে। এসব বিষয় ঠিকাদারই ভালো বলতে পারবেন। তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্যে বলেন।

জানতে চাইলে চৌরঙ্গী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ লাল মুহাম্মদ ফোনে বলেন, ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন কক্ষবিশিষ্ট আধাপাকা টিনশেডের একটি ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। তবে ইটের মান খারাপ হওয়ায় দুই সপ্তাহ আগে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ কাজ চলছে কি না জানা নেই। দেওয়াল ভেঙে দেওয়ার বিষয়টিও তিনি জানেন না।

অধ্যক্ষ আরও বলেন, বারবার ঠিকাদারকে বলেও কাজের মান ভালো হচ্ছে না। তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কামনা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘মেরামত’ বরাদ্দের আওতায় চৌরঙ্গী মহাবিদ্যালয়ে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাজের ঠিকাদার কুষ্টিয়ার সিনথিয়া এন্টারপ্রাইজ। তবে কলেজে ভবন না থাকায় অধ্যক্ষের বিশেষ অনুরোধে ঠিকাদার মেরামতের বদলে নতুন আধাপাকা ঘর নির্মাণের কাজ করছেন।

কলেজ ভবন নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ, দেওয়াল ভেঙে দিলেন স্থানীয়রা

ঠিকাদার আহম্মেদ আলী বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নমানের ইট বাতিল করে আজ ভালো ইট দিয়ে কাজ চলছিল। তারপরও কে বা কারা নির্মাণাধীন দেওয়াল ভেঙে দিয়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক। প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন তিনি।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জাফর আলী বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় একবার কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। আবারও নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার হলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সরকারি কাজে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আল-মামুন সাগর/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।