সেন্টমার্টিনে জাহাজ যাওয়ার অনুমতি, ঝুলে আছে পয়েন্ট নির্ধারণ
মৌসুম শুরুর দুই মাস পার হলেও পরিবেশ-প্রতিবেশের দোহাই দিয়ে এখনো বন্ধ রয়েছে দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক গমন। তবে, সম্প্রতি প্রচার পাচ্ছে আগামী মাসের এক তারিখ থেকে সেন্টমার্টিন যাচ্ছে পর্যটকবাহী জাহাজ। সেই দিনক্ষণ লক্ষ্য করে অগ্রিম টিকিট বিক্রিও শুরু হয়েছে। জাহাজ ছাড়ার সম্ভাব্য স্থান উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাটকে উল্লেখ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টিকিট সংগ্রহকারীরা।
তবে, সোমবার (২৫ নভেম্বর) পর্যন্ত সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ কোন পয়েন্ট থেকে ছেড়ে যাবে, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত সমন্বয় কমিটির সদস্য কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সেন্টমার্টিনগামী এমবি বারো আউলিয়া জাহাজের পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘১ ডিসেম্বর মৌসুমের প্রথম জাহাজ নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এরই মধ্যে এক হাজার অগ্রিম টিকিটি কিনেছেন ভ্রমণকারীরা। পর্যটকদের নিরাপদে সেন্টমার্টিনে পৌঁছাতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা ইনানী নৌবাহিনীর জেটি থেকেই জাহাজ ছাড়ার প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ব্যাটে-বলে এক হলে ওইদিন পর্যটকরা সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যেতে পারবেন।’
তবে, কক্সবাজার সদর ইউএনও নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত কমিটি এখনো বৈঠক করতে পারেনি। তাই সাগরের কোন পয়েন্ট থেকে জাহাজ ছাড়বে তা ঠিক করা হয়নি। কাল (মঙ্গলবার) বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’
সেন্টমার্টিনের হোটেল ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ বলেন, ‘শুনেছি ১ ডিসেম্বর থেকে ইনানী জেটিঘাট দিয়ে কর্ণফুলী ও বারো আউলিয়া নামের দুটি জাহাজে পর্যটক সেন্টমার্টিনে আসবেন। সেজন্য দ্বীপের হোটেল, রেস্তোরাঁ ও অন্যান্য দোকানপাট সাজানো হচ্ছে।’
ট্যুরস অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের কারণে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট দিয়ে সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে, ১ ডিসেম্বর থেকে ইনানী থেকে দুটি পর্যটকবাহী জাহাজ যাওয়ার আশায় পর্যটকরা টিকিট সংগ্রহ করছেন। সাবরাং পয়েন্ট দিয়েও জাহাজ সেন্টমার্টিন যেতে পারে। এ ব্যাপারেও প্রস্তুতি চলছে বলে শুনেছি।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পর্যটকবাহী কয়েকটি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে, কোন পয়েন্ট থেকে তা ছাড়বে সে সিদ্ধান্ত আসবে পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে করে দেওয়া যৌথ কমিটির সভায়। তাই, ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট দিয়ে জাহাজ যাবে কিনা তা এখনো পরিষ্কার নয়।’
সেন্টমার্টিনে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে ২০ নভেম্বর যৌথ কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানা বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে এবং তা দেখভাল করবে এই যৌথ কমিটি।
মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান সই করা এক আদেশে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)। সদস্যসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক।
সদস্য হিসেবে রয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের প্রতিনিধিরা।
সায়ীদ আলমগীর/এসআর/এএসএম