ফসলের মাঠজুড়ে শাপলার সমাহার দেখতে তারাপুরে ছুটছে কুমিল্লার মানুষ
কুমিল্লার লাকসামে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ফুটেছে শাপলা ফুল। অপরূপ এই দৃশ্য কোনো বিল বা গভীর জলাশয়ের নয়। উপজেলার তারাপুর গ্রামের ফসলের মাঠেই দেখা মিলেছে মনমাতানো এ সৌন্দর্যের। যতদূর চোখ যায় লাল শাপলার চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যে মুগ্ধ পথচারীরা। কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক লাগোয়া হওয়ায় প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন শত শত প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ।
উপজেলার বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামটিতে গিয়ে দেখা যায়, ফসলের মাঠে কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও কোমর সমান। এরইমধ্যে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে লাল শাপলার গাছ। ফসলের মাঠে যতদূর চোখ যায় শুধুই লাল শাপলার চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যে মুগ্ধ হওয়ার দৃশ্য।
স্থানীয়রা বলছেন, বিগত সময়ে কখনোই একসঙ্গে এতো শাপলা তারা দেখেননি। এবার বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হয় হাজার হাজার শাপলা গাছ।
গত ২০ দিন থেকে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠটি দখলে নিয়ে ফুটেছে চোখ জুড়ানো শাপলা ফুল। প্রকৃতির অপরূপ এ দৃশ্যটি ক্যামেরায় বন্দি করতে দর্শনার্থীদের অনেকেই গ্রামীণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। আবার কেউ কাদা মাড়িয়ে শাপলার ফুল জড়িয়ে ছবি তুলতে নেমে পড়ছেন পানিতে।
আরিফুর রহমান নামে এক প্রকৃতিপ্রেমী বলেন, ফেসবুকে শাপলা ফুলের সুন্দর ছবি দেখে ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কুমিল্লা নগরী থেকে এখানে ছুটে এসেছি বন্ধুদের নিয়ে। ৫টি বাইকে আমরা ১০ বন্ধু এসেছি। দৃশ্যটি ভালোই লেগেছে। বিকেল থেকে আমাদের মতো আরও অনেক তরুণ-তরুণী এখানে এসেছেন। সূর্যোদয়ের পর শাপলার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য যে কারো নজর কাড়ে।
মলিনা রানী নামে এক তরুণী বলেন, লাল শাপলার সৌন্দর্যে প্রকৃতি অপরূপভাবে সেজেছে। যেন তারাপুরকে উজাড় করে সাজিয়েছে। যে দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। কুমিল্লায় এতো বড় লাল শাপলার বিল আছে বলে আমার মনে হয় না। এখানে যে কেউ আসলেই মন ভালো হয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
আবদুল্লা আল মামুন নামে এক তরুণ বলেন, আমার গ্রাম এখানে। প্রতিদিন সকালে অন্তত একবার লাল শাপলাগুলো দেখতে আসি।
তারাপুরের কৃষক মনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কত মানুষ আসে এ গ্রামে। শাপলা ক্ষেতে নেমে ছবি তোলে। দেখতে ভালোই লাগে। তবে এর আগে একসঙ্গে কখনো এত শাপলা গাছ দেখিনি। এবারের বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শাপলা গাছ দৃশ্যমান হয়। এলাকার মানুষ সবজি হিসেবে এখন শাপলা রান্না করে খাচ্ছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসরণ অধিদপ্তর, কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, বন্যার কারণে লাল শাপলা লাকসামের পাশাপাশি মনোহরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমিতেও জন্মেছে। কিছুদিন পরই এসব জমিতে বোরো আবাদ হবে। শাপলার পাতা, কাণ্ড পচে মাটিতে জৈব পদার্থ হিসেবে কাজ করবে। মূলত লাল শাপলা প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়ায়। ভ্রমণপিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমীদের আকৃষ্ট করে।
এফএ/এমএস