আলু বীজ না পেয়ে কৃষকদের মহাসড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া
প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০২৪

বগুড়ার শেরপুরে দ্বিগুণ দাম দিয়েও আলুর বীজ না পেয়ে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করেছে কৃষকরা। এসময় বীজ সিন্ডিকেটে জড়িত একটি কোম্পানির পরিবেশকদের (ডিলার) আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে উপজেলা পরিষদের সামনে ঘণ্টাব্যাপী ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে দূরপাল্লার যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

একপর্যায়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কৃষকদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া উচরং গ্রামের আলু চাষি সাফিউল ইসলাম সাফি অভিযোগ করে বলেন, এবার পনের বিঘা জমিতে আলু চাষ করবেন। এ জন্য ব্র্যাকের ডিলার ফিরোজ আলী মাস্টারকে বীজের জন্য অগ্রিম টাকাও দিয়েছেন। কিন্তু তিনি আমাকে বীজ না দিয়ে নির্ধারিত দামের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা নিয়ে পাশের উপজেলায় বিক্রি করে দেন। তাই গত দুই-তিন দিন ধরে তার দোকানে ধর্না দিয়েও কোনো বীজ পাইনি। এখন দেখছি তার দোকান তালাবদ্ধ। মোবাইল ফোনও বন্ধ রেখে গা-ঢাকা দিয়েছেন।

সাধুবাড়ী গ্রামের আইয়ুব আলী বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারো পঁচিশ বিঘা জমিতে আলু লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত করেছি। কিন্তু আলু বীজ পাচ্ছি না। বেলঘরিয়া এলাকার রাকিব অ্যান্ড সাকিব স্টোর ও বীজ ডিলার রফিকুল ইসলামের নিকট একাধিকবার ধর্না দিয়েও কোনো বীজ পাইনি। শুনলাম তার বরাদ্দ পাওয়া সিংগভাগ বীজ কালোবাজারে বিক্রি করেছেন। অবশেষে এক কৃষকের নিকট থেকে কিছু বীজ নিয়ে অর্ধেক জমিতে আলু লাগিয়েছি। বাকি জমি পতিত পড়ে আছে বলে জানান তিনি।

ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, ব্র্যাকসহ সব কোম্পানি ও বিএডিসির ডিলাররা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বীজ আলুর (চল্লিশ কেজি) বস্তা প্রতি ২৫০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিয়ে এসব আলু বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ স্থানীয় কৃষি অফিসের কর্তারা রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছেন। এমনকি এ অফিসের কর্তাদের ম্যানেজ করেই অসাধু ডিলাররা এ নৈরাজ্য চালাচ্ছেন বলে দাবি করেন তারা।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার। পাশাপাশি এ বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনো গণমাধ্যমে বক্তব্য দিবেন না বলেও মন্তব্য করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আলু বীজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে বলে স্বীকার করে বলেন, বীজ সিন্ডিকেট ভাঙতে উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছেন। এরমধ্যে বাড়তি দামে বীজ বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক ডিলারকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে অভিযুক্ত পরিবেশক ফিরোজ আলী মাস্টার ও রফিকুল ইসলাম তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে গা-ঢাকা দেওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

এলবি/আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।