ছাত্র আন্দোলন
হত্যাচেষ্টা মামলায় শামীম ওসমানের সহযোগী হলেন ছাত্রদল নেতা!
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইব্রাহিম হোসেন (১৯) নামের এক শিক্ষার্থীকে গুলি করে আহত করার ঘটনায় করা মামলায় এক ছাত্রদল নেতাকে আসামি করা হয়েছে। একই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে। মামলায় ছাত্রদল নেতাকে আসামি করায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে আহত শিক্ষার্থী ইব্রাহিম হোসেন নিজেই বাদী হয়ে ৮৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০ জনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান (৩৭), ভাতিজা আজমেরি ওসমান (৪৫), মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম (৫৬), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান (৭৮), সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া (৬২) ও থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতির (৫৫)।
একই মামলার ৬৮ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ছাত্রদল নেতা মো. কাদিরকে (৩০)। কাদির নাসিক সিআইখোলা এলাকার মৃত সিরাজের ছেলে। তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সবশেষ কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২০ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোডের ভূমিপল্লী এলাকার বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বাদী ইব্রাহিমসহ বহু মানুষ সড়কে বিক্ষোভ করছিলেন। তখন শামীম ওসমান ও তার ছেলে অয়ন ওসমানসহ মামলায় উল্লেখিত আসামিরা একত্রিত হয়ে তাদের উদ্দেশ্যে গুলি করেন। একপর্যায়ে তারা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ইব্রাহিমের ডান পায়ে ও কোমরে দুটি গুলি লাগে। পরে ছাত্র-জনতা তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করান।
এ ঘটনায় ছাত্রদল নেতাকে আসামি করায় মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলে, তখন কাদির ছাত্রদলের রানিং কমিটিতে ছিল। ছাত্রদলের যে কোনো কর্মসূচিতে সবসময় সামনের সারিতে থাকতো সে। আন্দোলন চলাকালে সে পুরোটা সময় ছাত্রদের পাশে ছিল। সে কীভাবে হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি হয়? এতে আমি গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি।’
আসামি ছাত্রদল নেতা মো. কাদির বলেন, ‘মামলার এজাহারে আমার নাম দেখে আমি হতবাক। ছাত্রদলের সক্রিয় রাজনীতি করায় আওয়ামী লীগের আমলে অনেক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে আমাকে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমার আবারও মিথ্যা মামলার আসামি হতে হবে তা কখনো কল্পনা করিনি। আমি আসলে এ নিয়ে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।’
এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. ইব্রাহিম হোসেনকে কল দিলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান। একটু পর কল দেবেন বলে কলটি রেখে দেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘আমরা তো এজাহারকারী না। আমরা যদি চার্জশিটে তার নাম দেই, তাহলে তিনি প্রশ্ন করতে পারবেন কেন আমরা তার নাম দিলাম। তদন্তে যদি তিনি নিরপরাধ প্রমাণিত হন এবং বৈষম্যবিরোধীর স্বপক্ষের শক্তির সহায়ক হন, তাহলে তার নাম বাদ যাবে। নিরপরাধ কোনো ব্যক্তিকে হয়রানি করার সুযোগ নেই।’
এসআর/এমএস