নবান্নের মেলায় বাহারি মাছের পসরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ১০:৩৫ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

অগ্রহায়ণ মানেই বাঙালির ঐতিহ্যবাহী, অসাম্প্রদায়িক ও মাটির সঙ্গে চির বন্ধনযুক্ত নবান্ন উৎসবের মাস। এক সময় ঢেঁকির সুরেলা শব্দ জানান দিতো নবান্ন উৎসবের। আর সেই নবান্ন উৎসবকে ফুটিয়ে তুলতে জয়পুরহাটে বসেছে এতিহ্যবাহী নবান্নের মাছের মেলা।

মেলায় ঢুকেই সারি সারি দোকানগুলোতে চোখে পড়ে মন-জুড়ানো সব মাছের পসরা। দূরদূরান্ত থেকে বিক্রেতারা এসেছেন মাছ বিক্রির জন্য। দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো মাছগুলো প্রায় সবই বড় আকারের। মেলায় ছোট মাছ নেই বললেই চলে। আছে বড় বড় রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প ও পাঙাশ মাছ। চাষের মাছের পাশাপাশি নদীর বাঘাইড়, গাঙচিতল এবং দু-এক ধরনের সামুদ্রিক মাছও উঠেছে এ মেলায়। সবাই দরদাম করে মাছ কিনছেন। আকারভেদে ৩০০ থেকে ১৮০০ টাকায় প্রতি কেজি মাছ বিক্রি হচ্ছে।

জানা গেছে, নবান্ন উৎসবে প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে এখানে মাছের মেলা বসে। মেলায় অংশ নেন উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, মাদারপুর, হাটশর, হারুঞ্জা, পুনট, বেগুনগ্রাম, পাঁচগ্রামসহ আশপাশের ২৫-৩০ গ্রামের মানুষ। উৎসবে প্রতি বাড়িতেই মেয়ে জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকে নিমন্ত্রণ করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকেও লোকজন আসেন মেলায় মাছ কিনতে।

নবান্নের মেলায় বাহারি মাছের পসরা

কথা হয় মাছ কিনতে আসা ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ক্ষেতলাল থেকে মাছ কিনতে এসেছি। কয়েক বছর ধরেই এই মাছের মেলা থেকে মাছ কিনি। এখানে অনেক বড় বড় মাছ পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর এই মেলার জন্য অপেক্ষা করি। গত বছরের চেয়ে এবারের মেলায় প্রচুর মাছ উঠেছে, কিন্তু দামটা একটু বেশি।

মোজাম্মেল হোসেন এসেছেন তার নাতীকে নিয়ে। তিনি একটি মাছ কিনেছেন ৬ হাজার টাকা দিয়ে। নাতি-নাতনী মেয়ে-জামাইসহ নিকট আত্মীয়দের দাওয়াত করেছেন। সবাইকে নতুন চালের ভাত এবং পছন্দের মাছ খাওয়াবেন বলে জানান তিনি।

মাছ ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী জাগো নিউজকে বলেন, এবারের মাছের মেলায় অনেক বেশি লোক সমাগম হলেও মাছ বিক্রি সেই তুলনায় কিছুটা কম। তারপরও যেটুকু হয়েছে, সব খরচ বাদে লাভ ভালোই থাকবে।

নবান্নের মেলায় বাহারি মাছের পসরা

মৎস্য খামারি আনোয়ার জাগো নিউজকে বলেন, মেলা সামনে রেখে এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে রেখেছিলাম। তাই এবার পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে পারছি।

তিনি বলেন, মেলায় বহু ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের দেখে ভালো লাগছে। আসলে বাঙালি জীবন থেকে উৎসবগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এ রকম উৎসবে অংশ নিতে পারলে ব্যস্ততম জীবনে কিছুটা হলেও প্রশান্তি আসে।

পাঁচশিরা মাছের মেলার ইজারাদার রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসব বিরাজ করে। আজও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এ মেলায় দিনে ৫০-৬০টি স্টলের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা অন্তত কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা করবেন।

আল মামুন/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।