মুক্তির দাবিতে কারাগারে অনশনে দুই জেএমবি কর্মী
খুলনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তির দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে অনশন করছেন জামাত উল মুজাহেদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দুই কর্মী। বর্তমানে তারা কারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
খুলনা জেলা কারাগারের সুপার মো. নাসির উদ্দিন প্রধান ওই দুই কয়েদীর অনশনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেল সুপার বলেন, কয়েদী নুর মোহাম্মদ অনিক ও মোজাহিদুল ইসলাম আদালতের মাধ্যমে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর খুলনা জেলা কারাগারে আসেন। তারা দুইজনই একটি মামলায় ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত এবং তাদের উভয়েরই এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অপর একটি মামলায় দুটি ধারায় যথাক্রমে ১০ বছর ও ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা রয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে এক মাস ও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত এরা। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা চলমান।
গত ২২ সেপ্টেম্বর তারা দুজন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে জানান, তারা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে দীর্ঘ ১৭ দিন বগুড়া ডিবি হেফাজতে নিয়ে গুম করে নির্যাতন করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিগত শেখ হাসিনা সরকারের দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের কট্টর সমালোচনা করে জনমত গড়ে তোলার কারণে এ প্রহসনের মামলার স্বীকার হয়েছেন। বিগত ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও তারা কারাগারে এখনো আটক থাকায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং সাজাভোগ করছেন। তাদের বর্তমান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ পূর্বক কারাগার থেকে দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত কারাগারে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রথমবার অনশনের হুমকি দিয়ে সরকারি খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন।
ওই সময়ে তাদের আগ্রহ অনুযায়ী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করিয়ে স্বাভাবিক করানো হয়। কারাগার থেকে এখনও মুক্তি না পাওয়ায় তারা একই দাবি তুলে গত ১০ নভেম্বর থেকে থেকে পুনরায় সরকারি খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছেন।
কারাবিধি অনুযায়ী তাদেরকে নিয়মিত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে, কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জনের মাধ্যমে তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত কাউন্সিলিং করা হচ্ছে এবং ১২ ও ১৩ নভেম্বর তাদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় তাদেরকে আইনজীবী ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে সরকারি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বলানো হয়েছে। কিন্তু তন্মধ্যে নুর মোহাম্মদ অনিক এখনো অনশনরত আছেন।
আলমগীর হান্নান/এফএ/জেআইএম