সিন্ডিকেট
গুদামে নেই, হাজার টাকা বেশি দিলেই পৌঁছে যাচ্ছে বীজ আলু
দেশে আলু উৎপাদনকারী তৃতীয় জেলা হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাট। এবার সেই জেলাতেই আলুচাষ করতে গিয়ে বীজ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। নির্ধারিত দামের চেয়ে মণপ্রতি আলুর প্রকারভেদে ৬শ থেকে ১ হাজার টাকা বেশি দামে বীজ বিক্রি করছেন সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। শুধু আলুই নয়, সারও বেশি দামে বিক্রি করছেন এসব ব্যবসায়ীরা। এতে আলু উৎপাদনে দ্বিগুণ খরচ হচ্ছে কৃষকদের। ফলে আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার হেলকুন্ডা গ্রামের কৃষক আতোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মৌসুম শুরুর আগেই বীজ আলুর কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা। এভাবে কারসাজির মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে তারা বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী কৃষক আরও অভিযোগ করে বলেন, পর্যাপ্ত যোগান থাকলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তাদের দোকান ও গুদামে বীজ আলু রাখছেন না। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে মণপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বেশি রেখে অজ্ঞাত স্থান থেকে কৃষকের কাছে বীজ আলু পৌঁছে দিচ্ছেন তারা।
কালাই উপজেলার হাজিপাড়া গ্রামের কৃষক ইমরান আলী জাগো নিউজকে বলেন, ব্র্যাক কোম্পানির আলু আমাকে কিনতে হয়েছে ৪ হাজার টাকা করে বস্তা। অথচ কোম্পানির মূল্য ছিল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২শ টাকা। আবার সার কিনতে হয়েছে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বস্তাপ্রতি ২ থেকে ৩শ টাকা বেশি দামে।
কৃষকরা অভিযোগ করে বলছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে লোক দেখানো জরিমানা ছাড়া তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বীজ আলুর সংকটের অজুহাতে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা খাওয়ার উপযোগী আলু বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কে প্যাকেটজাত করছেন। এসব নিম্ন মানের বীজ আলু কিনে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা করছি।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বীজ আলুর বাজার তদারকী করছি। স্থানীয় প্রশাসনও আমাদের সহযোগিতা করছে। দাম বেশি রাখায় এরইমধ্যে কয়েকজন ডিলারকে জরিমানা করা হয়েছে। বাজার তদারকি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবীদ রাহেলা পারভিন জাগো নিউজকে বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হাজার মেট্রিক টন বেশি বীজ আলুর চাহিদা আছে। এখনো আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শেষ হয়নি। এ কারণে পুরোদমে আলুর চাষ শুরু হয়নি।
এফএ/এএসএম