ছ’মাস আগে মাথায় আকাশ ভেঙেছে রুবীর, এখন ভাঙছে ঘর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ১২:২৩ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

দীর্ঘ ৬ বছর অসুস্থ থাকার পর ৬ মাস আগে স্বামী মনির কাজীর অকাল মৃত্যুতে যেন আকাশ ভেঙে পড়ে সাবিনা ইয়াসমিন রুবীর মাথায়। সংসারের পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে তার কাঁধে। এরমধ্যে ভাঙতে ভাঙতে নদী এখন তার ঘরের দুয়ারে। যেকোনো সময় ভাঙতে পারে ঘর। এতে নির্ঘুম রাত কাটছে তার। ঘরবাড়ি না থাকায় সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাবেন সেটাও জানা নেই তার।

অসহায় রুবী ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মগর ইউনিয়নের কাঠিপাড়া গ্রামে তার বাবার বাড়িতে এক চাচার ভাঙা ঘরে থাকেন। সেটিও নদীভাঙনে বিলীনের পথে।

জীবনের অনিশ্চয়তার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন সাবিনা ইয়াসমিন রুবী। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, স্বামী অসুস্থ থাকার কারণে সহায়-সম্বল সব কিছু হারিয়ে চিকিৎসা চালিয়েছি। তিনি ৬ মাস আগে মারা যান। বর্তমানে আমার তিনটি সন্তান রয়েছেন। বড় মেয়েটা ঝালকাঠি সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। একটা ছেলে নলছিটি মার্চেন্টস্ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র, ছোট ছেলেটাও স্কুলে পড়ছে। তাদের লেখাপড়ার অনেক খরচ। মানুষ যা দেয় তা দিয়ে কোনো রকম আমার সংসার চলে। তবে লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছি না। মেয়েটা বড় হয়েছে বিয়ে দেওয়া লাগবে। তাই আল্লাহর ওপর ভরসা করে আছি। আমি কোনো সরকারি সহায়তাও পাই না। যদি কোনো সহায়তা পেতাম তাহলে কিছুটা হলেও উপকার হতো।

অসহায় রুবীর বাবা ইউসুফ হাওলাদার বলেন, আমার জায়গা জমি সব নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে থাকার মতো একটু ঘর আছে, সেটাও মনে হয় চলে যাবে। আমি গরু-ছাগল পালন করে সংসার চালাই। আমার পক্ষে মেয়ের সংসার দেখা সম্ভব না। জামাই মারা যাওয়া পর মেয়ে আমার এক চাচাতো ভাইর ভাঙা ঘরে থাকছে।

নলছিটির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম বলেন, চেষ্টা করবো তাকে সরকারি সহয়তা দেওয়ার। আর সমাজসেবায় যদি কোটা থাকে তাহলে ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

আতিকুর রহমান/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।