গাইবান্ধায় সাঁওতাল হত্যার বিচার ৮ বছরেও শুরু হয়নি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৫:১৭ পিএম, ০৬ নভেম্বর ২০২৪

আট বছরেও গাইবান্ধার তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার শুরু হয়নি। বাস্তবায়িত হয়নি কোনো আশার বাণী। নির্যাতনের শিকার সাঁওতালরা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জে রংপুর মিল কর্তৃপক্ষ জমি উদ্ধারের নামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও পুলিশ মিলে সাঁওতালদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় হামলা চালিয়ে তিন সাঁওতালকে হত্যা করা হয়। সে দিনের ঘটনা স্মরণ করে বুধবার (৬ নভেম্বর) শোক র্যালি ও সমাবেশ করেন সাঁওতালরা।

তারা বলেন, আহতরা উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে কেউ পঙ্গু, কেউ শরীরে গুলির ক্ষত নিয়ে যন্ত্রণায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন। ঘটনার পর সরকারের পক্ষ থেকে নানা আশ্বাসের কথা শোনালেও তার কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি।

তারা সাঁওতাল হত্যার বিচার, আসামিদের গ্রেফতার, বাড়িঘরে লুটপাট, সাঁওতালদের ক্ষতিপূরণ ও তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানান।

সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, আজকের এই দিনে রংপুর চিনি কল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান শাকিল আলম বুলবুলের নেতৃত্বে পুলিশের সহযোগিতায় সাঁওতাল পল্লীতে অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যা করা হয়। আট বছর অতিবাহিত হলেও আমরা বিচার পাই নাই। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের আবেদন যেন সঠিক বিচার পাই।

এছাড়া গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়। পরে মাদারীপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে সাঁওতালরা জাতীয় ও কালো পতাকা, তীর-ধনুক, বাদ্যযন্ত্র, ব্যানার, বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুনসহ একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন।

গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (গানাসাস) চত্বরে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী, অ্যাড. রফিক আহমেদ সিরাজী, এলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল প্রমুখ।

এসময় বক্তারা বলেন, শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ হত্যাকাণ্ড ঘটনার পর থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে স্থানীয় তৎকালীন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। কিন্তু বিচার হওয়া তো দূরের কথা মামলার আসামি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বুলবুল আকন্দসহ অন্যান্য মূল আসামিদের কেউই গ্রেফতার হননি।

এ এইচ শামীম/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।