কুমিল্লায় যৌতুক মামলায় পুলিশের এসআই কারাগারে


প্রকাশিত: ০১:১৩ পিএম, ০৯ মে ২০১৬

কুমিল্লায় ফ্লাট কেনার জন্য স্ত্রীর কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের মামলায় পুলিশের বহুল আলোচিত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নানকে অবশেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দীর্ঘ এক বছরেরও অধিক সময় নারী নির্যাতন মামলার আসামি হয়েও তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও র্যাবে চাকরি করে আসছিলেন।

সোমবার দুপুরে ফেনীর দাগনভূইয়া থানার সাবেক ওই এসআই বর্তমানে রাঙামাটি পুলিশ লাইনে সংযুক্ত এসআই (সাময়িক বরখাস্তকৃত) আবদুল মান্নান কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক আজিজ আহমদ ভূইয়া জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। বাদী পক্ষের নিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল আউয়াল ভূইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
 
মামলার অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, বিগত ১৯৯৯ সালের ১১ এপ্রিল জেলার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের আবদুল মতিন সরকারের মেয়ে তুহিনা আক্তার রেখার সঙ্গে একই উপজেলার রাজামেহার গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে পুলিশের এসআই আবদুল মান্নানের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য তুহিনাকে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। গত ২ বছর পূর্বে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে মোটরসাইকেল কেনার জন্য ২ লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়।

মামলার বাদী তাহমিনা জানান, তাদের সংসারে ২ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান থাকার পরও তার স্বামী কর্মস্থলে এক নারী পুলিশ সদস্যের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় সংসারে আরও কলহ দেখা দেয়। এরই মধ্যে কুমিল্লা শহরে ফ্লাট কেনার জন্য তিনি (স্বামী) ২০ লাখ দাবি করেন। কিন্তু যৌতুক না দেয়ায় তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা সোয়া ১২টায় তাকে মারধর করে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় একই বছরের ১২ এপ্রিল স্বামী ছাড়াও তার দেবর আবদুল হান্নান, সাইফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, ননদ রাবেয়া খাতুন ও তার স্বামী জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে তুহিনা দেবিদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।

গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর দেবিদ্বার থানা পুলিশের এসআই নুরুল ইসলাম মজুমদার তাহমিনার স্বামী এসআই আবদুল মান্নান, ভাই সাইফুল ইসলাম ও বোন রাবেয়া খাতুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ঘটনার সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তার কর্মস্থল ফেনীর দাগনভূইয়া থানায় থাকলেও পরবর্তীতে তিনি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পরও তথ্য গোপন রেখে র্যাবসহ বিভিন্নস্থানে চাকরি করে।

সোমবার দুপুরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক আজিজ আহমদ ভূইয়া তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

মো. কামাল উদ্দিন/ এমএএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।