ভোলা
নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে মধ্যরাতে, ইলিশ শিকারে প্রস্তুত ৩ লাখ জেলে
রাত ১২টার পর থেকে উঠে যাচ্ছে ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা। দীর্ঘদিন পর নদীতে নামবেন জেলেরা। এরইমধ্যে প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছেন তারা। তাদের স্বপ্ন নিষেধাজ্ঞা শেষে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল থেকেই ট্রলার, নৌকা, জালসহ মাছ শিকারের সব উপকরণ মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। কেউ কেউ তীর থেকে তাদের ট্রলার ও নৌকা দলবেঁধে টেনে নদীতে নামাচ্ছেন। আবার কেউ ট্রলারের ইঞ্জিন নদীর তীরে চালিয়ে পরীক্ষা করে নিচ্ছেন।
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড তুলাতুলি গ্রামের বাসিন্দা ও মেঘনা নদীর জেলে জাহাঙ্গীর মাঝি, আব্দুর রহমান ও আব্দুল হাকিম মাঝি বলেন, ‘আজ রাত ১২টায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। ১২টা ১ মিনিটের পর আমরা নদীতে নামবো। ইলিশ শিকারের জন্য ট্রলার, নৌকা ও জালসহ সব ধরনের উপকরণ প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।’
একই এলাকার ইউনুস মাঝি ও আজগর মাঝি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় আমরা সরকারিভাবে ২৫ কেজি চাল পেয়েছি। কিন্তু সংসারে খাওয়ার জন্য অন্যান্য খাবার কিনতে হয়েছে। আয়-রোজগার বন্ধ ছিল তাই ধারদেনা করে সংসার চালিয়েছি। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গিয়ে ইলিশ শিকার করে সব ধারদেনা পরিশোধ করতে পারবো বলে স্বপ্ন দেখছি।’
নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাবেন বলে আশা করছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব। তিনি বলেন, ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেরা নেমে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ শিকার করতে পারবেন। তখন তারা তাদের বিগত দিনের ধারদেনা পরিশোধ করে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা মোটামুটি সফল হয়েছে বলেও দাবি করেন এই কর্মকর্তা।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করায় ভোলার সাত উপজেলা থেকে চার শতাধিক জেলেকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হয়েছে অন্তত সাড়ে তিনশ জেলেকে।
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হওয়ায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। একই সময় ইলিশ পরিবহন, বাজারজাত ও ক্রয়-বিক্রয়ের ওপরও ছিল নিষেধাজ্ঞা।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এসআর/জেআইএম