মিরসরাইয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, ০২ নভেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, গত দুই মাসে ২২০ শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তবে সরকারি হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি হাসপাতালেও এই রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। চিকিৎসকদের দাবি, অসচেতনতায় শিশুদের ডায়রিয়া বাড়ছে।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে ১৮৮ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ১০০ জনই শিশু। ১-২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ২৫২ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তার মধ্যে ১২ জন শিশু। গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে নিয়মিত দুই শতাধিক ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। কিন্তু মে, জুন ও জুলাই মাসে অনেকটা কমে যায়। আগস্ট মাসে মিরসরাইয়ের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। ফলে আগস্টের পর থেকে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ডায়রিয়া রোগী বাড়তে থাকে।

চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু রোগী বন্যার কারণে বাড়লেও শিশুদের ডায়রিয়া হচ্ছে মূলত মায়ের অসচেতনতার কারণে। মায়েরা ময়লা হাতে শিশুদের খাবার খাওয়ান। অনেক সময় শিশুর হাত পরিষ্কার না করে খাবার দেওয়া হয়। এছাড়া পুকুরের পানিতে রান্না করা হয় খাবার।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু ওয়ার্ডের ১২টি আসনে ১৭ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। এসময় কথা হয় গত সোমবার সন্ধ্যায় জ্বর ও ডায়রিয়া নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া ১৩ মাস বয়সী জুবায়েদা হারুন নামে এক শিশুর মায়ের সঙ্গে।

তিনি নাম প্রকাশ না করে বলেন, রোববার সকাল থেকে গায়ে জ্বর ও ডায়রিয়া শুরু হয় জুবায়েদার। পরে পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে জ্বর ও ডায়রিয়া কমেছে।

চৌধুরীহাট এলাকার দিদারুল আলমের এক বছর সাত মাস বয়সী মেয়ে জান্নাতুল আনিশা বমি ও ডায়রিয়া নিয়ে সোমবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। তার মা বলেন, রোববার রাতে হঠাৎ করে আনিশার বমি ও ডায়রিয়া শুরু হয়। পরে সোমবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করান। ডাক্তার বলেছে, আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা পুকুরের পানি দিয়ে রান্না করি।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স ইনর্চাজ সীমা রানী নাথ বলেন, মায়ের অসচেতনতায় শিশুদের ডায়রিয়া বাড়ছে। শিশুর ডায়রিয়া হলে যে পরিমাণ চিকিৎসা ও সেবা নিতে হয় মায়েরা তা করেন না। এছাড়া পুকুরের পানি ব্যবহারের কারণে ডায়রিয়া হতে পারে। আমরা সব সময় মায়েদের সচেতন হতে পরামর্শ দেই।

এ বিষয়ে জানতে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো মিনহাজ উদ্দিনের মোবাইল কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

এম মাঈন উদ্দিন/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।