জাপার সেকাল-একাল

মোস্তফার ব্যক্তি ইমেজে টিকে আছে দুর্গের অস্তিত্ব

জিতু কবীর জিতু কবীর , নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
প্রকাশিত: ০৬:২৬ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা-ছবি সংগৃহীত

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত-সমালোচিত একটি দল জাতীয় পার্টি। স্বাধীন বাংলাদেশে দুই মেয়াদে সরকারও গঠনের ইতিহাস আছে দলটির। কারাগারে বন্দি থেকেও যেমন চমক দেখিয়েছিলেন দলের চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তেমনি ক্ষণে ক্ষণে মত বদলানোর কারণেও হয়েছিলেন সমালোচিত।

সরকারি দলের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, আবার ওই সংসদের বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকা এবং সেই অবস্থায় সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান করে নেওয়া জাতীয় পার্টিকে নিয়ে তিন পর্বের ধারাবাহিকের আজ শেষ পর্ব।

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নিজ জেলা রংপুর। ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টি নামে নতুন দল গঠনের পর এরশাদকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছেন নেতাকর্মীরা। দলের ভেতর যারাই তার বিরোধিতা করেছেন তাদের বহিষ্কার নয়তো কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতেও পিছপা হননি এরশাদ। এক্ষেত্রে বাদ যাননি আপন ভাই জিএম কাদের, সহধর্মিণী রওশন এরশাদ, ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফসহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।

দেশের অন্য এলাকায় জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল থাকলেও রংপুর শহর ও এর আশপাশে তাদের অবস্থান বেশ শক্ত। রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জাতীয় পার্টির বর্তমান কো-চেয়ারম্যান। দলীয় পরিচয়ের পাশাপাশি তার ব্যক্তি ইমেজও রয়েছে। দুটো মিলেই জাতীয় পার্টির অবস্থান তিনি ধরে রাখতে পারছেন বলে মনে করি।

দীর্ঘ সময় রংপুরে আধিপত্য বিস্তার করা দলটি নানা কারণে কয়েক দফায় ভাঙনের শিকার হয়েছে। পাড়ি দিতে হয়েছে নানা চড়াই-উতরাই। কয়েক দফায় ভাঙন আর বর্ষীয়ান নেতাদের দল ছেড়ে যাওয়ার কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। তবে দেশের সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে রংপুরে কিছুটা শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে দলটি।

মাঠের রাজনীতিতে সরব মোস্তফা-সংগৃহীত ছবিমাঠের রাজনীতিতে সরব মোস্তফা-সংগৃহীত ছবি

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সাংগঠনিক দক্ষতা এবং ব্যক্তি ইমেজে দুর্গের অস্তিত্ব টিকে আছে বলে মনে করেন তৃণমূল নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। নব্বইয়ের দশকে রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি পৌর নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক, সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি, জেলা সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিব হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ ও ২০২২ সালের নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির হয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি জাতীয় পার্টির রংপুর মহানগরের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে তাকে দলের কো-চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়। এর আগে তিনি দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন।

বঙ্গভবনে উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি ছিল। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম ধাপের সংলাপে জাতীয় পার্টি আমন্ত্রণ পেয়ে অংশ নিয়ে সংস্কার কার্যক্রমে মতামত দিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের কথায় পরবর্তী সংলাপে জাতীয় পার্টিকে ডাকা হয়নি, এটা হতাশাজনক। দু-একজন ছাত্রের কথায় সরকার কেন এমন সিদ্ধান্ত নেবে এটা আমাদের প্রশ্ন।—মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা

এরশাদ মুক্তির আন্দোলনসহ রংপুরের উন্নয়নে বিভিন্ন সময়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোস্তফা।

২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রথম রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলীয় প্রতীক ছাড়া অনুষ্ঠিত হয়। সেবার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির বর্তমান কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুর কাছে ২৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি। দল পাশে না থাকলেও ব্যক্তি ইমেজে ৭৭ হাজার ভোট পেয়ে বেশ সাড়া ফেলেন মোস্তফা।

২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মোস্তফাকে আবার দলে ফিরিয়ে নেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

পরে ২০১৭ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এক লাখ ৬০ হাজার ৪৮৯ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু পেয়েছিলেন ৬২ হাজার ৪০০ ভোট এবং বিএনপির প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা পেয়েছিলেন ৩৫ হাজার ১৩৬ ভোট। ওই বছর ভোটার সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪।

এই সুবিধাবাদীরা, নিজেরা বিরোধীদলীয় ভূমিকায় আসে একটা গাড়ি পাওয়ার জন্য, মন্ত্রিপাড়ায় একটা বাড়ি পাওয়ার জন্য, কিছু বেতন পাওয়ার জন্য, এমপির সিটটি পাওয়ার জন্য, টেন্ডারবাজি, সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি করার জন্য। এখন এই ভণ্ডরা ভালো সাজতেছে। দেশকে এ অবস্থায় আনার জন্য এদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।—সারজিস আলম

২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট পেয়ে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হন।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল পান ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন পেয়েছিলেন ৩৩ হাজার ৮৮৩ এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া ২২ হাজার ৩০৬ ভোট পেয়ে জামানত হারান। ওই নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত অংশ নেয়নি।

সারজিস-হাসনাতের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন-ফাইল ছবিসারজিস-হাসনাতের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন-ফাইল ছবি

রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ছিল চার লাখ ২৬ হাজার ৪৭০।

মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মোস্তফা বিশাল ব্যবধানে জয় পেলেও রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি সাধারণ ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সুবিধা করতে পারেনি জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত এমন ১৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও চারজন নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ওয়ার্ডগুলোতে ১৩ জন স্বতন্ত্র, বিএনপিপন্থি তিনজন, জাসদ ও বাসদের একজন করে এবং জাতীয় পার্টির পাঁচজন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জাতীয় পার্টিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন মোস্তফা। হয়ে ওঠেন এরশাদ ও জিএম কাদেরের আস্থাভাজন। এরশাদ ও জিএম কাদেরকে নিয়ে যারাই বিগত সময়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন মোস্তফা।

দলের সংকট নিরসনে তৃণমূল নেতাকর্মীরাও যেন মোস্তফাতেই আস্থা খুঁজে পান, হয়ে ওঠেন চাঙা।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগর কমিটির কার্যকরী পরিষদের সদস্য ফরহাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, দেশের অন্য এলাকায় জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল থাকলেও রংপুর শহর ও এর আশপাশে তাদের অবস্থান বেশ শক্ত। রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জাতীয় পার্টির বর্তমান কো-চেয়ারম্যান। দলীয় পরিচয়ের পাশাপাশি তার ব্যক্তি ইমেজও রয়েছে। দুটো মিলেই জাতীয় পার্টির অবস্থান তিনি ধরে রাখতে পারছেন বলে মনে করি।

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার প্রতিবাদে সরব ওয়ে ওঠেন মোস্তফা। ১৪ অক্টোবর রাতে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথ কর্মিসভায় দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপস্থিতিতে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দেন তিনি। জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা না হলে সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রংপুরের রাজনৈতিক মাঠ।

ওইদিন রাত ৩টায় রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম দেন। ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকেলেও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।

সেই রাতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় পার্টির সহযোগী সংগঠন জাতীয় যুব সংহতি এবং জাতীয় ছাত্রসমাজ। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

যদিও জাতীয় পার্টিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এরইমধ্যে রংপুর সফর করেছেন সারজিস আলম। ২৬ অক্টোবর (শনিবার) সকালে রংপুর সফরে আসেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম এনডিসি। তার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলমকে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকতে দেখা যায়।

সারজিসের আসার খবরে সেদিন দুপুরে লাঠি মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে জাতীয় পার্টি (জাপা)। দুপুরে রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এ সময় মিছিলে বাঁশের লাঠি হাতে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পায়রা চত্বরে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হন নেতাকর্মীরা। সেখানে বক্তব্য দেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

জনগণের সঙ্গে মোস্তফার সখ্য-সংগৃহীত ছবিজনগণের সঙ্গে মোস্তফার সখ্য-সংগৃহীত ছবি

নিজ বক্তব্যে মোস্তফা বলেন, বঙ্গভবনে উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি ছিল। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম ধাপের সংলাপে জাতীয় পার্টি আমন্ত্রণ পেয়ে অংশ নিয়ে সংস্কার কার্যক্রমে মতামত দিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের কথায় পরবর্তী সংলাপে জাতীয় পার্টিকে ডাকা হয়নি, এটা হতাশাজনক। দু-একজন ছাত্রের কথায় সরকার কেন এমন সিদ্ধান্ত নেবে এটা আমাদের প্রশ্ন।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টিকে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা ডাকবেন কি ডাকবেন না, সেটা তার ব্যাপার। এটা সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়ে আসবে। কিন্তু আমরা কী দেখলাম? হাসনাত- সারজিসের কথায় সরকার যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করে, সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদেরও অনেক অবদান রয়েছে।

একইদিন বিকেলে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘রাষ্ট্র পুনর্গঠনে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সারজিস আলম।

এসময় তিনি বলেন, ‘এই জাতীয় পার্টির বন্ধুগণ, এই সুবিধাবাদীরা, নিজেরা বিরোধীদলীয় ভূমিকায় আসে একটা গাড়ি পাওয়ার জন্য, মন্ত্রিপাড়ায় একটা বাড়ি পাওয়ার জন্য, কিছু বেতন পাওয়ার জন্য, এমপির সিটটি পাওয়ার জন্য, টেন্ডারবাজি, সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি করার জন্য। এখন এই ভণ্ডরা ভালো সাজতেছে। দেশকে এই অবস্থায় আনার জন্য এদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

এরপর রাত ৯টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করলে মিছিলে অংশ নিয়ে বক্তব্যও রাখেন সারজিস আলম।

 

এর আগে রওশন এরশাদ ও তার অনুসারীদের সঙ্গে জিএম কাদেরের দ্বন্দ্ব যখন তুঙ্গে তখনও রংপুর থেকে ফুঁসে ওঠেন মোস্তফা। পরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব দল অংশ নিলেও মোস্তফার সঙ্গেই লড়াই করতে হবে বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররা।

রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ডের মনোহরপুর এলাকার নয়ন মিয়া বলেন, দলীয় পরিচয়ের পাশাপাশি তিনি ব্যক্তি হিসেবেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। যে দলেরই হোক না কেন, ভোট হলে মোস্তফাকে হিসাব করতে হবে। সাধারণ মানুষ তাকে পছন্দ করেন।

রংপুরে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রংপুর জেলা জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম জাগো নিউজকে বলেন, রংপুরে নেতৃত্ব দেওয়ার ভালো মানুষ রয়েছে। এর পেছনে রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং রংপুর মহানগরের সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার অবদান। তার নেতৃত্ব, তার জনপ্রিয়তার কারণে রংপুরে জাতীয় পার্টির অবস্থান ভালো।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর বলেন, রাজনীতিবিদ এবং ব্যক্তি হিসেবে মোস্তফিজার রহমান মোস্তফা একজন ভালো মানুষ। সংগঠক হিসেবেও তিনি দক্ষ। এছাড়া প্রশাসক হিসেবেও তার দক্ষতার পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। সব মিলিয়ে একজন দক্ষ রাজনীতিবিদের যেসব গুণাবলি থাকা দরকার তা মোস্তফার মাঝে রয়েছে।

তিনি বলেন, কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দলেও তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আমাদের প্রেসিডিয়াম পরিষদে তাকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করা হয়। সাংগঠনিক কাঠামো হিসেবে রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে দক্ষ নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা মোস্তফার নেতৃত্বে আমরা করেছি। থানা কমিটিও খুব শিগগিরই গঠন করা হবে।

জেডআইকে/এসএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।