রংপুরে যাবেন সারজিস-হাসনাত, ‘ষড়যন্ত্রের আলামত’ বললেন মোস্তফা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর
প্রকাশিত: ০২:৪৫ এএম, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর রংপুর আগমন ঘিরে নৈরাজ্যকারীরা যেন সুযোগ নিতে না পারে, সেজন্য সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

এসময় মোস্তফা বলেন, ‌‘সারজিস ও হাসনাত আব্দুল্লাহর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই, দ্বন্দ্বও নেই। এর আগে ওই দুজনকে রংপুরে ঢুকতে না দেওয়ার যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল সেটা দলীয় ঘোষণা ছিল। দলের বিপক্ষে তাদের অবস্থানের কারণে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মুখপাত্র হিসেবে আমি এ ঘোষণা দিয়েছি। এখন আমাদের ঘোষণাকে উপেক্ষা করে তারা রংপুর আসবে। আমরা এখানে গভীর ষড়যন্ত্রের আলামত পাচ্ছি। তারা রংপুরে আসার ঘোষণা দিয়েছে ঠিকই কিন্তু সেটা পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায়।’

তিনি বলেন, ‘শনিবার (২৬ অক্টোবর) পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) রংপুরে আসবেন। সারা জেলার পুলিশ থাকবে আইজিপির কর্মসূচিতে। এসময় জাতীয় পার্টির ব্যানারে কোনো নৈরাজ্যকারী যেন সুযোগ নিয়ে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য দলের চেয়ারম্যান নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের সজাগ থাকতে বলেছেন। এজন্য আমরা আমাদের গঠনমূলক যে কর্মসূচি সেটা পালন করবো। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো সাংগঠনিক শক্তি ও সামর্থ্য রয়েছে জাতীয় পার্টির।’

মোস্তফা বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান যেহেতু নির্দেশ দিয়েছেন তাই তার প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা আমাদের কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ থাকবো। তবে সেই কর্মসূচি যদি বাধাগ্রস্ত হয় তাহলে তো মুখোমুখি একটা অবস্থানের সৃষ্টি হবে। সারজিস ও হাসনাত আব্দুল্লাহর প্রকাশ্য কোনো কর্মসূচি বা সমাবেশ থাকলে তো তখন মুখোমুখি একটা অবস্থানের সৃষ্টি হবে। তখন শক্তিমত্তার পরিচয়ের একটা বিষয় আছে। তার আগে আমরা ওইভাবে মরুভূমির মধ্যে পানি দেওয়ার চেষ্টা করছি না। আমরা আমাদের গঠনমূলক যে কর্মসূচিগুলো করা দরকার তা করবো। নেতাকর্মীরা সজাগ আছেন। এসময় শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচির কথাও জানান জাতীয় পার্টির এ নেতা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘দেশে কারা পুলিশের নিরাপত্তা পাবে, পুলিশের নিরাপত্তা নিয়ে কারা চলাচল করবে তার একটা আইন আছে। সারজিস ও হাসনাত পুলিশি নিরাপত্তা পাওয়ার মতো যোগ্য কোনো ব্যক্তি না হলেও আইজিপির সঙ্গে ট্যাগ করে রংপুরে তাদের আগমন উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করছি।’

এসময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, রংপুর জেলা জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিমসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।

প্রসঙ্গত, শনিবার (২৬ অক্টোবর) পুলিশের আইজিপি ময়নুল ইসলাম রংপুর সফরে যাবেন। একই‌ দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর রংপুর যাওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে জাতীয় পার্টিকে না ডাকার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ জানান দুই সমন্বয়ক। এ ঘটনায় রংপুরে জাতীয় পার্টির যৌথ কর্মিসভা থেকে ওই দুই সমন্বয়ককে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন মোস্তফা। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় পার্টির পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।

জিতু কবীর/এসআর

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।