ছাত্র আন্দোলন
টাকার অভাবে এক হাত অকেজোর পথে গুলিবিদ্ধ তামিমের
টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত কলেজছাত্র তামিম। তামিমের বাম হাতটি প্রায় অকেজোর পথে। হাতের তীব্র যন্ত্রণায় গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে নির্ঘুম রাত পার করছেন তিনি।
আহত তামিম হোসাইন (২২) মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের বাহেরান্দী গ্রামের মো. আনোয়ার মাতুব্বরের ছেলে। তিনি মাদারীপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের ছাত্র।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কলেজছাত্র তামিম গত ১৮ জুলাই সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাদারীপুর শহরের শকুনি লেকের পাড়ে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। এ সময় পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মী-সমর্থকরা মিছিলের অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। এক পর্যায়ে গুলি ছোড়েন। ওই গুলিতে বহু শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা আহত হন। ওই ঘটনায় তামিমের শরীরেও একাধিক স্থানে গুলি লাগে।
তাকে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। পরে আবার ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। তবে টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না তার।
তামিমের বাম হাতের তালু আর একটি আঙ্গুলের ভেতরে গুলি থাকায়, তা বের করা যায়নি। তাই দরকার উন্নত চিকিৎসা। কিন্তু টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পারায় অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন তামিম।
তামিমের বাবা আনোয়ার মাতুব্বর ঢাকায় বেসকারী কোম্পানিতে চাকরি করে সংসার চালালেও ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য টাকা যোগাড় করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তামিমের মা নাজমা বেগম বলেন, বর্তমানে ঢাকায় তামিমের চিকিৎসা চলছে। ওর বাম হাতের রগে গুলি থাকায় এক হাত অকেজো হওয়ার পথে। তবে বেশ কয়েকটি সংগঠন থেকে কিছু সহযোগিতা পেয়েছি। তা দিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব না। তাই সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। হয়তো আমার ছেলের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা হলে হাতটি ভালো হয়ে যেতে পারে। তা না হলে হয়তো চিরদিনের মতো অকেজো হয়ে যাবে।
আহত তামিম হোসাইন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জীবনের মায়া ত্যাগ করে যারা গুলির সামনে নিজেদের বুক উচিয়ে দিয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে আমার হাতটি ভালো হয়ে যেতো। আমি সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে। যদি কেউ আইনগত ব্যবস্থা নিতে চান, সেক্ষেত্রেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি কোনো পুলিশ সদস্য সরাসরি দায়ী থাকলে তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এফএ/এএসএম