কুড়িগ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছে এলাকাবাসী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৪:১৮ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

কুড়িগ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছেন এলাকাবাসী। সাত বছর ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ও মৌখিক আবেদন করে যথাযথ ব্যবস্থা না পাওয়ায় এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।

স্থানীয়রা জানায়, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হানাগড়ের মাথা থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক বন্যায় ভেঙে যায়। এতে ভেলাকোপা ওয়ার্ডের চারটি গ্রাম ও একটি ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে পড়েন চরম বিপাকে। তৎকালীন পৌর মেয়র ও সাবেক মেয়রকে অভিযোগ ও অনুরোধ করে সড়কটির কোনো ব্যবস্থা নেন নি। শেষে গ্রামবাসী নিজের টাকা দিয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে। সেটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রতিদিন যাতায়াতকারী কেউ না কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এমন দুরবস্থা দেখেও পৌর কর্তৃপক্ষ নীরব থাকায় বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে এগিয়ে আসেন। তিনদিন ধরে সব শ্রেণির মানুষের পরিশ্রম ও অর্থ দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মাজেদ বলেন, নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা হাজারো প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচিত হলে তারা জনগণের আর খোঁজ নেয় না। কুড়িগ্রাম পৌর শহরের চেয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে রাস্তাগুলো বর্তমানে অনেক ভালো। শহরে বসবাস করে সব টোল দিলেও পৌর সভার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি এ এলাকার মানুষজন।

কুড়িগ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছে এলাকাবাসী

অটোরিকশাচালক মো. হায়দার আলী বলেন, প্রতিদিন এখানকার হাজারো মানুষের একমাত্র ভরসা এ সড়ক। বৃদ্ধ শিশুদের নিয়ে খুব কষ্ট করে এ সড়কে চলাচল করতে হয়। অসুস্থ রোগী নিয়ে স্বজনরা তো পড়ে চরম বিপাকে। অথচ কোনো পৌর মেয়র এ রাস্তাটি নিয়ে কাজ করলো না। শেষে নিজেদের কষ্ট নিজেদের দূর করতে হলো।

স্বেচ্ছাসেবক মো. নুর ইসলাম নুরু বলেন, আমরা নামমাত্র পৌর শহরে বসবাস করছি। সবধরনের রাজস্ব কর দিয়ে আসলেও আমরা এক নম্বর পৌর সভার সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ কিংবা অ্যাম্বুল্যান্সের প্রয়োজন হলে শুধুমাত্র সড়কের কারণে পাই না। গত ৭ বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়ে কেউ কথা রাখেনি। বাধ্য হয়ে আমরা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি নির্মাণ করছি।

স্থানীয় সাবেক কমিশনার জমসেদ আলী টুংকু মিয়া বলেন, এ বিষয়ে বারবার কাগজপত্র নিয়ে ঢাকা যোগাযোগ করা হয়েছে কিন্তু কোনো সমাধান না পাওয়ায় গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে।

ফজলুল করিম ফারাজী/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।