ইউটিউবারের কাণ্ডে এলাকাছাড়া যৌন হয়রানির শিকার কিশোরী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ১১:১৯ এএম, ১০ অক্টোবর ২০২৪
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক কিশোরীকে (১৩) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর সাংবাদিকতার নীতিমালা বহির্ভূতভাবে ওই কিশোরীর ছবিসহ সাক্ষাতকারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন নজরুল শেখ নামের এক কথিত সাংবাদিক (ইউটিউবার)। পরে লজ্জায় এলাকা ছাড়েন ওই কিশোরীর পরিবার।

ভিডিওটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিলে বুধবার (৯ অক্টোবর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফি বিন কবিরের কাছে ওই ইউটিউবার ক্ষমাপ্রার্থনা করে মুচলেকা জমা দিয়েছেন।

এর আগে গত সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার ডাংগী ইউনিয়নের ভবুকদিয়া এলাকায় এক ইজিবাইক চালকসহ দুই যুবকের কাছে ধর্ষণের শিকার হন ওই কিশোরী। অভিযুক্ত দুই যুবকের মধ্যে রয়েছেন, উপজেলার আটাইল গ্রামের সাদের হোসেনের ছেলে অটোচালক ইমান আলী (২৬) ও ফজলু শেখের ছেলে নাছির শেখ (২৫)।

জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ওই কিশোরী তার বোনের বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি ফেরার জন্য তালমা মোড় থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ওঠে। কিন্তু তাকে নির্ধারিত স্থানে না নিয়ে আটাইল গ্রামের ফাঁকা মাঠের মধ্যে নিয়ে যান। পরে ওই অটোচালক ও তার বন্ধু কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা চালান। ওই কিশোরীর চিৎকারে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পরিবারের জিম্মায় দেন।

এরপর সাংবাদিক পরিচয়ে স্থানীয় পশু চিকিৎসক নজরুল শেখ ভুক্তভোগী কিশোরীর ভিডিও জবানবন্দি নেন এবং সেটি তার ফেসবুক পেইজে নীতিমালা বহির্ভূতভাবে প্রচার করেন। এ ঘটনার পরে লজ্জায় ওই কিশোরী ও তার পরিবার ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যান।

এ বিষয়ে ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন বকুল বলেন, ওই কিশোরীকে হেনস্তা করার চেষ্টা চালালে সে দৌড়ে পাশের একটি বাড়িতে ওঠে। পরে আমি খবর পেয়ে তাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিই।

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফি বিন কবির বলেন, কিশোরী ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু এ ঘটনার পর স্থানীয় এক সাংবাদিক ভিকটিমের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করায় ওই কিশোরীসহ পরিবার ঢাকায় চলে গেছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। এছাড়া স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককে ডেকে ওই সাংবাদিক ঠিক করেছে কি না জানতে চেয়েছি এবং তাকে বোঝানো হয়েছে। তবে কোনো মুচলেকা নেওয়া হয়নি।

এদিকে মুচলেকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে ওই সাংবাদিক (ইউটিউবার) বলেন, আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এবং মেয়েটির উপকারের জন্যই ভিডিওটি প্রকাশ করেছিলাম। নিয়ম না মেনে ভিডিও ছাড়া ভুল হয়েছিল, পরে ডিলিট করে দিয়েছি। এ ব্যাপারে বুধবার সকালে ইউএনও আমার কাছ থেকে মুচলেকাও নিয়েছেন।

এ ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত দুই যুবক পলাতক রয়েছেন। অভিযুক্ত ইমান আলীর স্ত্রী বলেন, ঘটনার পর থেকে তার ফোন বন্ধ, কোথায় আছে জানি না।

এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফর আলী বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমার জানা নেই। কেউ থানায় অভিযোগও দেননি। অভিযোগ দিলে বা মামলা করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এন কে বি নয়ন/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।