ময়মনসিংহে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) ভোর থেকে এসব উপজেলায় মানুষের ঘরবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, বৃষ্টি না হলে পানি নামতে আরও দু-একদিন সময় লাগবে। বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী না পৌঁছানোরও অভিযোগ অনেকের।
সকালে সিংহেশ্বর ইউনিয়নের ভাটপাড় ও সিংহেশ্বর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের ঘরবাড়ি থেকে পানি নামছে।
এর আগে বন্যায় ফুলপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়েছিল ২৪ হাজার মানুষ।
ভাটপাড় গ্রামের আব্দুল মোতালেব বলেন, আজকে সকাল থেকে পানি কমছে, তবে বৃষ্টি না হলে আরও দু-একদিন লাগবে পানি নামতে। এই কয়দিন দুর্ভোগে থাকলেও কেউ সহযোগিতা করেনি।
একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৩ সালের পর এবারের বন্যা সবচেয়ে বড় হয়েছে। আমার ৯০ কাঠা জমির ধান তলিয়ে আছে পানিতে। কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না। আমার মতো হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে সরকার সহযোগিতা না করলে ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল। বিএনপি নেতাকর্মীরা ত্রাণ সহায়তা করলেও প্রশাসনের কেউ আসেনি।
সিংহেশ্বর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নয়ছুদ্দিন আকন্দ বলেন, মানুষের স্বপ্ন পানিতে ভেসে গেছে, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। আমরা চাই অন্তত সরকার সহযোগিতা করুক।
হালুয়াঘাট উপজেলার আমতৈল গ্রামের হাসিনা বানু বলেন, মানুষের বাসায় কাজ করে আমার দিন চলতো। বন্যার কারণে এখন কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুবেলা ঠিকমতো খেতেও পারছি না। কোনো ধরনের সহযোগিতাও পাচ্ছি না। ত্রাণসামগ্রী আমাদের প্রয়োজন।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, বুধবার রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় ভোর থেকে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। বাড়িঘরের পানি ইতোমধ্যে নামতে শুরু করেছে।
তিনি জানান, তিন উপজেলায় নগদ সাত লাখ টাকা ও ৬৩ টন চাল বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকাল থেকে ফুলপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আশা রাখছি বৃষ্টি না হলে দ্রুত পানি নেমে যাবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত শারমিন বলেন, আজকে নতুন করে কোনো গ্রাম প্লাবিত হয়নি। তবে পানি কমতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে পানি কমে যাবে।
হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহমেদ বলেন, পানি কমতে শুরু করায় মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসতে শুরু করেছে। হালুয়াঘাটে ১৮ হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাময়িকভাবে তাদের সহযোগিতা করার পাশাপাশি ক্ষতি নিরূপণ করে সামগ্রিক সহযোগিতা করতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হবে।
মঞ্জুরুল ইসলাম/জেডএইচ/জেআইএম