নেত্রকোনায় ফের পানি বেড়েছে, প্লাবিত ১৩১ গ্রাম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০৫:৪৮ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

নেত্রকোনায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এতে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ফের বেড়েছে বন্যার পানি। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনার ঝাঞ্জাইল এলাকায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বধলার জারিয়া বাজার এলাকায় সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ওই কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক সাওয়ার জাহান জানান, উব্দাখালীর পানি কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৬ দশমিক ৫৫ মিটার। অবশ্য দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী ও সদর উপজেলার কংস নদের পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নেত্রকোনায় ফের পানি বেড়েছে, প্লাবিত ১৩১ গ্রাম

এদিকে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নেত্রকোনার ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এছাড়া শেরপুরের ভোগাই-কংসের পানি জারিয়া এলাকায় কংস নদ দিয়ে কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীতে প্রবাহিত হয়। এতে দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, পূর্বধলা, বারহাট্টা ও সদর পাঁচটি উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্র ও জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, নেত্রকোনার বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত ২৭টি ইউনিয়নের ১৩১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছেন ৬৫ হাজার মানুষ। ১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ৪৩টি পরিবার। প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত। পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে ২০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এরমধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৮৬টি। ২১৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। প্রায় ৩১০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক পানির নিচে।

কলমাকান্দার নক্তিপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, পানি সকাল থেকে আরও বাড়ছে। ৩ একর জমিতে আমন ধান আবাদ করেছিলাম। বেশ কিছু খেতের ধান গাছে শিষ ছাড়ছিল। কিন্তু বন্যার কারণে সব ধান গাছের ওপর তিন থেকে আট ফুট পানি। মনে হয় ধান গাছ আর টিকবে না।

নেত্রকোনায় ফের পানি বেড়েছে, প্লাবিত ১৩১ গ্রাম

দুর্গাপুরের কাকৈইগড়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের কৃষক রহমত আলী ও শিবগঞ্জ এলাকার জাহাঙ্গীর মাহমুদ বলেন, চারদিন ধরে গ্রামের সবার ধান খেত পানির নিচে। কোনো খেতের ধানই আর রক্ষা হবে না। গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে আছি। উঁচু সড়কে খোলা আকাশের নিচে গরু রাখা হয়েছে। খড় না থাকায় খাবার দিতে পারছি না।

জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি আবারও বাড়ছে। পূর্বধলার জারিয়া এলাকা কংস নদের তীরে থাকা বেড়িবাঁধটি দুই স্থানে ভেঙে গেছে। এরপর থেকে পূর্বধলা, সদর ও বারহাট্টার বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। ফসলি জমিরও ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তবে বন্যা মোকাবিলায় আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত ৩ লাখ টাকা, ২ হাজার ৮০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ৭০ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে।

এইচ এম কামাল/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।