পদ্মার চরে পানি, হতাশ চাষিরা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ঈশ্বরদী (পাবনা)
প্রকাশিত: ১০:১৭ এএম, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

পাবনার ঈশ্বরদীতে গত ১৫ দিনে পদ্মার পানি দুই দফা বেড়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১২ দশমিক ৩৮ মিটার। যা ছিল চলতি বছরের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত পানি কমতে থাকে। ৩ অক্টোবর পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১২ দশমিক ১৬ মিটার। তবে দুইদিন পর ৫ অক্টোবর পুনরায় বাড়তে শুরু করে পানি। ওইদিন পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১২ দশমিক ২৫ মিটার। ৬ সেপ্টেম্বর সকালে পানির উচ্চতা ১ সেন্টিমিটার কমে ১২ দশমিক ২৪ মিটার হয়। এছাড়া ৭ সেপ্টেম্বর আরেক দফা কমে পানির উচ্চতা হয় ১২ দশমিক ১৪ মিটার।

তবে পানি আপাতত কমলেও আবার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের রিডার হারিসুন নাঈম ইবনে সালাম।

এদিকে দেশে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা দেখা দিয়েছে। পদ্মায় পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা ও নদী ভাঙনের আশংকায় নদী তীরবর্তী এলাকায় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

৫নং সাঁড়াঘাটের দোকানী স্বপন হোসেন বলেন, সপ্তাহখানেক আগে নদীর পানি কমে গিয়েছিল। তিনদিন হলো আবারো বাড়তে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। অক্টোবর মাসের আগে নদীতে পানি বাড়তে দেখিনি। এবার কেন অসময়ে পানি বাড়ছে তা বুঝতে পারছি না।

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় নদীতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরেন বিশ্বজিত হালদার। তিনি জাগো নিউজকে জানান, গত তিন ধরে পদ্মায় আবারো পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীতে স্রোতও বেড়েছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি গার্ডারের মধ্যে এখন ১৩টি গার্ডার পানির নিচে। আরেকটি গার্ডারের কাছাকাছি পানি। যেকোনো সময় এ গার্ডার পর্যন্ত পানি পৌঁছে যাবে। যেভাবে পানি বাড়ছে এতে এলাকার মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।

পদ্মার চরে পানি, হতাশ চাষিরা

অপরদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে লক্ষ্মীকুন্ডা, দাদাপুর, বিলকেদার, ডিগ্রীচরের শত শত হেক্টর জমিতে পানি উঠে গেছে। কলার চর ভেসে গেছে। এসব চরের সবজির আবাদ ডুবে গেছে। সাঁড়া ইউনিয়নের পদ্মা চরাঞ্চল পুরোপুরি এখন নদীতে ডুবে গেছে। চরের শত শত হেক্টর আবাদী জমি এখন পানির নিচে। ফলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সাঁড়ার চরবামনির কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে পদ্মার পানি বাড়তে আগে কখনো দেখিনি। অন্যান্য বছর চরের ডুবে যাওয়া এসব জমিতে আমরা শীতকালীন সবজি আবাদের প্রস্তুতি শুরু করি। এবার এসব জমি সব পানির নিচে।

লক্ষ্মীকুণ্ডা চরের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, অসময়ে পদ্মার পানি বৃদ্ধি ও দফায় দফায় প্রবল বর্ষণের ফলে সবজির ফলনে ব্যাপক ক্ষতি হলো। অধিকাংশ সবজিক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকদের যে কী পরিমাণ ক্ষতি হলো যারা কৃষক শুধু তারাই এ বিষয়টি উপলদ্ধি করতে পারবে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, উজানের ঢল ও প্রবল বর্ষণের ফলে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ মিটার। এখানে বর্তমানে পানির উচ্চতা ১২ দশমিক ২৪ মিটার। পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই।

শেখ মহসীন/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।