ঈশ্বরদীতে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ
পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রেন অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীরা জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলের গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন ঈশ্বরদী। দীর্ঘদিন ধরে চিত্রা এক্সপ্রেস খুলনা-ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে যমুনা সেতু হয়ে চলাচল করছে। পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া, নাটোরের লালপুর-বাগাতিপাড়া, রাজশাহীর বাঘা, চারঘাটসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ চিত্রা ট্রেনে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে চলাচল করে। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে ঢাকা-খুলনা রুটে চলাচলকারী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও যশোর-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি রুট পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চলাচল শুরু করে। এরপর শুধু ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে যমুনা সেতু হয়ে একমাত্র চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল করছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আগামী নভেম্বর মাস থেকে এ চিত্রা ট্রেনের রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফলে ঈশ্বরদী যমুনা সেতু হয়ে ঢাকাগামী একমাত্র ট্রেনটি রুট পরিবর্তন হলে এ অঞ্চলের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। চিত্রা ট্রেনের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে পুনরায় চালুর দাবিতে জানাচ্ছি। অন্যথায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা এস এম ফজলুর রহমান, ইসলাম হোসেন জুয়েল, আনোয়ার হোসেন জনি, প্রভাষক রাজিবুল আলম ইভান, ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ, ব্যবসায়ী সাইফ হাসান সেলিম, সাংবাদিক সেলিম সরদার। সমাবেশ পরিচালনা করেন ব্যবসায়ী মাসুম পারভেজ কল্লোল।
এসময় প্রায় ৩০ মিনিট চিত্রা এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। পরে ট্রেন ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার পর রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের সুপারিনটেন্টডেন্ট মহিউল ইসলামের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন বিক্ষোভকারীরা।
চিত্রা ট্রেনের রুট পরিবর্তনের প্রতিবাদ জানিয়ে বিশিষ্ট কলাম লেখক মোশাররফ হোসেন মুসা বলেন, ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে চলাচলকারী সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন গত বছর নভেম্বর মাসে রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করছে। এরপর একমাত্র চিত্রা এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে খুলনা-ঢাকা রুটে চলাচল করছে। এখন শুনছি এ ট্রেনটি রুট পরিবর্তন করে খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা রুটে চলাচল করবে।
সাংস্কৃতিক কর্মী আতাউর রহমান বাবলু বলেন, ঈশ্বরদী শতবছরের ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে জংশন স্টেশন। এ স্টেশন থেকে এখন মাত্র একটি চিত্রা ট্রেন যমুনা সেতু হয়ে ঢাকা-খুলনা রুটে চলাচল করছে। এ ট্রেনটির রুট পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্ত কখনো মানা যায় না। এটি কখনো ঈশ্বরদীবাসী মানবে না।
ঈশ্বরদীর পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের পরিবহন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফারহান মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, চিত্রা ট্রেনের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। এবিষয়ে আমাদের রেল মন্ত্রনালয় থেকে এখনো পর্যন্ত লিখিত বা মৌখিক কোনো কিছু জানানো হয়নি।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে (রাজশাহী) মহাব্যবস্থাপক আব্দুল আউয়াল ভূঁইয়া জাগো নিউজকে জানান, চিত্রা ট্রেনের রুট পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আগামী নভেম্বর থেকে খুলনা-যশোর থেকে ঢাকাগামী ট্রেন নতুন রেল লাইন দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে শুনেছি।
শেখ মহসীন/আরএইচ/জেআইএম