ডিমের দাম বেশি, মুরগির দাম কম
খুচরা পর্যায়ে ডিম, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু জয়পুরহাটের বাজারগুলোতে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। তবে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। সোনালি মুরগি বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) জয়পুরহাটের নতুনহাট, পূর্ব বাজার, সাহেব বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে এক পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ টাকা, এক হালি ৫০ টাকা। অথচ সরকার খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা বেঁধে দেয়।
এদিকে সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা কেজি দরে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের তুলনায় ১০ টাকা কমেই পাচ্ছেন ক্রেতারা। আর সোনালি মুরগি সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ২০ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে।
সাহেব বাজারের ডিম ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ডিম কিনতেই আমাদের প্রতি পিস খরচ হচ্ছে ১২ টাকার ওপরে। এর মধ্যে আবার কিছু ডিম ভেঙে যায়, নষ্ট হয়। এখন আমরা বিক্রি করছি সাড়ে ১২ টাকা পিস, আর এক হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যেহেতু আমাদের বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে, সেহেতু আমরা ডিমপ্রতি ৫০ পয়সা লাভ করছি।
পূর্ব বাজারের ব্যবসায়ী লিটন হোসেন বলেন, আমরা কম টাকায় কিনতে না পারলে কীভাবে সরকারি দামে বিক্রি করবো? ডিম বিক্রি করে আমাদের খুব একটা লাভ হয় না। ডিমপ্রতি ৪০-৫০ পয়সা থাকে আমাদের।
নতুনহাটে ডিম কিনতে আসা সাজু সরকার জাগো নিউজকে বলেন, সরকার ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকায়।
তিনি বলেন, বাজারে কোনো তদারকি করার মানুষ নেই। শুধু দাম বেঁধে দিলে হবে না, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে।
অন্যদিকে মুরগির দামের বিষয়ে জানতে চাইলে নতুনহাটের ব্যবসায়ী রাসেল ইশতিয়াক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আজ আমরা ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আর সোনালি বিক্রি করছি ২৫০-৬০ টাকা কেজি দরে।
নতুন হাটের ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, খুচরা বাজারে মুরগির দাম নির্ভর করে পাইকারি বাজারের ওপর। আজ পাইকারি বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কম। তাই আমরাও কম দামেই বিক্রি করছি।
জয়পুরহাট সদরের শাহাপুর গ্রামের মা পোল্ট্রির স্বত্বাধিকারী আ. কুদ্দুস জাগো নিউজকে বলেন, আমি সোনালি মুরগি পালন করি। এক কেজি ওজনের একটি মুরগি লালন-পালন করতে খরচ হয় প্রায় ২২০-২২৫ টাকা। এখন আমার মুরগি কিনতে এসে পাইকাররা দাম বলছে ২২০ টাকা। তিনি বলেন, সোনালি মুরগি লালন-পালন করে আমাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। অথচ বাজারে ২৫০-২৬০ টাকা দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমাদের এই শিল্পকে দেখার কেউ নেই।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল এলাকার খামারি বাবু মিয়া বলেন, মুরগির সব ধরনের খাদ্যের দাম বেশি, আর বেশি দামের খাদ্য কিনে মুরগি পালন করে তেমন লাভ হচ্ছে না। আমরা কষ্টে আছি আমাদের দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা কৃষি বিতরণ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিচ্ছি।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বাজারগুলো মনিটরিং করছি। সরকারের বেধে দেওয়া দামের চেয়ে কেউ যদি বেশি দাম নেয়, আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আল মামুন/জেডএইচ/এমএস