পোশাকশ্রমিকদের অবরোধ
১১ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক
গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের ১১ ঘণ্টা পর সড়ক থেকে সরে গেছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এতে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এরআগে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকার টি অ্যান্ড জেড গ্রুপের অ্যাপারেলস প্লাস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
এসময় উত্তেজিত শ্রমিকরা মিছিল সহকারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বর্ষা সিনেমা হলের সামনে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেন। এতে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন না পরিশোধ করেই কারখানা বন্ধ করে দেয় টি অ্যান্ড জেড গ্রুপের অ্যাপারেলস প্লাস লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় সেপ্টম্বরের শুরুতে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। কিন্তু মালিকপক্ষ বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করে ৩০ সেপ্টেম্বর পরিশোধের কথা জানায়। এরপর শ্রমিকরা আর আন্দোলন করেননি। তবে পূর্ব নির্ধারিত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বেতন চাইলে কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করেনি। পরে রাতেই শ্রমিকরা বিক্ষোভ এবং মহাসড়ক অবরোধ করে।
রাত ১টার দিকে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যান। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা ফের বেতনের দাবিতে ভোগড়া বাইপাস মোড় ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয়দিকে ৯ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে টাঙ্গাইলের দিকে অন্তত ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। অনেকে বিকল্প পথ ব্যবহার করে গন্তব্যে যান। আবার অনেকে যাত্রা বাতিল করে বাড়ি ফিরে গেছেন।
অন্যদিকে মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকার এম এম নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা টিফিন বিল, নাইট বিল ও হাজিরা বোনাস বাড়ানোর দাবিতে সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ করেন। কোনো সমাধান না হওয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এছাড়া আশুলিয়ায় শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে বাইপাইল থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত অন্তত ১০ কিলোমিটার সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
গাজীপুর শিল্পপুলিশের পুলিশের এসপি সারোয়ার আলম বলেন, মহাসড়ক অবরোধকারী পোশাককারখানার শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। তারা বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন।
বাসন থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
আমিনুল ইসলাম/এসআর/এএসএম