হঠাৎ বেড়েছে পদ্মার পানি, ডুবছে ফসলি জমি
পাবনার ঈশ্বরদীতে গত সাতদিনের ব্যবধানে পদ্মায় পানি বেড়েছে ১ দশমিক ৫০ মিটার। ১৭ সেপ্টেম্বর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১০ দশমিক ৮৮ মিটার। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পানির উচ্চতা দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৩৮ মিটার। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার (১৩ দশমিক ৮০ মিটার) কাছাকাছি রয়েছে। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের রিডার হারিফুন নাঈম ইবনে সালাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে হঠাৎ পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতীরবর্তী এলাকায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পদ্মার চরাঞ্চলের ফসলের জমি তলিয়ে যাচ্ছে। এতে চরের কৃষকরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার সাঁড়া ও লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের পদ্মার চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে সাঁড়ার মোল্লারচর, বিলবামনির ৩২৫ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এখানকার ২২৫ বিঘা জমিতে আখের জমিতে পানি উঠেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসব আখ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের ১৫টি গার্ডারের মধ্যে এখন ১৩টি গার্ডারের নিচে পানি উঠেছে। বাকি দুই গার্ডারের নিচে যেকোনো সময় পানি উঠে যেতে পারে। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আশপাশের চরাঞ্চল ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন
- আন্তঃসীমান্ত ৫৪ নদীর ৩৬টিতে ৫৪টি বাঁধ দিয়েছে ভারত
- এবার শীত বাড়বে, অতিবৃষ্টি-তাপপ্রবাহ থাকবে আগামী বছরও
- পশ্চিমবঙ্গ: ফের পানি ছাড়লো ডিভিসি, আরও কয়েকটি গ্রামে বন্যার শঙ্কা
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকার নদীর মাঝি সঞ্জিত কুমার জাগো নিউজকে বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় হঠাৎ করেই পানি বেড়েছে। পদ্মা এখন পানিতে ভরপুর। এ বছরের মধ্যে এখনই পদ্মায় সবচেয়ে বেশি পানি। এত পানি গতবছরও ছিল না।
মাঝি বিশ্বজিৎ বলেন, সাত-আট দিন ধরে পানি বাড়ছে। শুনেছিলাম গতমাসের শেষের দিকে ফারাক্কা বাঁধ ছেড়ে দিয়েছিল। তখনও পদ্মায় এত পানি হয়নি। এক সপ্তাহে হঠাৎ এত পানি কীভাবে বাড়লো বুঝতে পারছি না।
উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের মোল্লারচরের ৩০ বিঘা জমিতে আখের আবাদ করেছেন সাত্তার হোসেন। তিনি বলেন, আখের জমিতে পানি উঠে গেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে দুই-চার দিনেই মধ্যেই পুরোচর ডুবে যাবে। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, হঠাৎ করেই পদ্মার পানি বাড়ছে। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ মিটার। এখানে বর্তমানে পানির উচ্চতা ১২ দশমিক ৩৮ মিটার। পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই। দুই-একদিনের মধ্যে কমতে শুরু করবে।
শেখ মহসীন/বিএ/এমএস