স্থানীয়দের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো ট্রেন

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
প্রকাশিত: ০৯:২০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তীব্র গরমে গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইনের বিভিন্ন জায়গায় দেখা দেয় ফাটল। পর্যায়ক্রমে সেগুলো ঝালাইয়ের মাধ্যমে মেরামত করেন রেলওয়ে শ্রমিকরা। কিন্তু ট্রেন চলাচলের কারণে ঝালাইকৃত স্থানের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে যায়। স্থানীয়রা যখন ভাঙা অংশ দেখতে পান ততক্ষণে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা মেইল আড়িখোলা স্টেশন থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল ঢাকার উদ্দেশ্যে।

সঙ্গে সঙ্গে তারা স্টেশন মাস্টারকে বিষয়টি জানান। তিনি ট্রেন থামানোর ব্যবস্থা করেন এবং ঘটনাস্থলে মিস্ত্রি পাঠান। শ্রমিকরা একঘণ্টার চেষ্টায় পুনরায় লাইনের কাজ শেষ করেন। এভাবেই অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি। বেঁচে যান শত শত যাত্রী।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আরমান হোসেন। এরআগে সকালে উপজেলার আড়িখোলা স্টেশনের কাজী বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্টেশন মাস্টার আরমান হোসেন বলেন, ‘সময় তখন সকাল সোয়া ৭টা। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ঢাকা মেইল আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনে আসে। নির্ধারিত সময়ে স্টেশন থেকে ছাড়ার কিছুক্ষণ পর স্থানীয় কয়েকজন এসে জানান, কাজী বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় রেললাইনের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে আছে। আমি তখন ট্রেনটিকে জরুরি ভিত্তিতে থামিয়ে ঘটনাস্থলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পাঠিয়ে দ্রুত রেল যোগাযোগ সচল করার ব্যবস্থা করি। এতে ওই লাইনে একঘণ্টা রেল যোগাযোগ বিলম্বিত হয়। তবে অন্য লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।’

স্থানীয়দের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো ট্রেন

আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন ইনচার্জ দিলীপ চন্দ্র দাস বলেন, ‘রেলওয়ের শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজ করেন না। তাদের কাজ হলো রেললাইনের টেকনিক্যাল কাজগুলো দেখাশোনা ও তদারকি করা। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা নির্ণয় করে মেরামত করা। আজকের ঘটনা যেখানে ঘটে, সেই স্থানে গতকাল দুপুরে তারা কাজ করেছেন। কাজ যদি ঠিকমতো করতেন, তাহলে একদিনের ব্যবধানে কীভাবে ঝালাই ছুটে যায়? এদের সব কাজেই দুই নম্বরি।’

রেলযাত্রী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন আড়িখোলা থেকে ঢাকায় ট্রেনে যাতায়াত করি। আজও সকালে ট্রেনের জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করছিলাম। ঢাকা মেইল আসলে ট্রেনে উঠি। একটু যাওয়ার পর হঠাৎ করেই ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়। পরে ট্রেন থেকে নেমে জানতে পারি সামনে রেললাইন ভেঙে পড়ে আছে। অল্পের জন্য রক্ষা পেলাম।’

আরেক যাত্রী নয়ন সরকার বলেন, ‘আড়িখোলা স্টেশনের বেশ কয়েক জায়গায় এরকম ঝালাই দেওয়া অংশ রয়েছে। যেগুলো শ্রমিকরা দায়সাড়াভাবে মেরামত করেছেন। ভাগ্য ভালো ওই এলাকার মানুষ ভাঙা অংশটুকু দেখতে পেয়েছেন। তা নাহলে আজ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।’

দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে জানতে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান মিস্ত্রি বাদশার ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। যে কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আব্দুর রহমান আরমান/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।