জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে বৌদ্ধ ভিক্ষু-হিন্দু নেতা, বললেন ‘কৃতজ্ঞ’
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে দাওয়াত পেলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু ও হিন্দু নেতা। মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিশ্রীপাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উত্তম মহাথের ও কুয়াকাটা সৈকতের শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মন্ডল।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় জামায়াতের কলাপাড়া উপজেলা দক্ষিণ জোনের উদ্যোগে কুয়াকাটা পর্যটন ইয়ুথ ইনের মাঠে এ কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দাওয়াত পেয়ে মেহমান হিসেবে উপস্থিত থেকে সার্বিক বিষয়ে কথা বলেন ভিন্ন ধর্মের এই দুই নেতা। একইসঙ্গে বিশেষ মেহমান করায় কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
জামায়াতে ইসলামী কুয়াকাটা পৌর শাখার আমির মাঈনুল ইসলাম মান্নানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কুয়াকাটা সৈকতের শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মন্ডল বলেন, ‘আমি একজন মন্দিরের কর্মী। আপনারা এই প্রোগ্রামে আমাকে দাওয়াত দিয়েছেন, এটা আমার জীবনে নতুন অভিজ্ঞতা। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট থেকে এই পর্যন্ত আমিসহ অত্র এলাকার হিন্দুদের নিরাপত্তা দিয়েছে জামায়াত। এছাড়া প্রতিটি ঈদে কুয়াকাটা জামায়াত ইসলামের আমিরের পক্ষ থেকে আমাদের উপহারসামগ্রী পাঠানো হতো। আপনারা যেভাবে আমাদের আগলে রেখেছেন, আশা করি সামনেও এভাবে আমাদের আগলে রাখবেন।’
মিশ্রীপাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উত্তম মহাথের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর প্রোগ্রামে আমরা দাওয়াত পাবো, এটা কখনো কল্পনাও করিনি। শুধু দাওয়াত নয়, এখানে এসে আমার মনের কথা বলতে পেরেছি। আমি অনুরোধ করবো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনটি যে কারণে হয়েছিল, সেটি যেন সফল হয়ে প্রত্যেকটা মানুষ বৈষম্যের ঊর্ধ্বে থাকে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী জেলার আমির অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহ আলম, সেক্রেটারি এ বি এম সাইফুল্লাহ, নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট নাজমুল আহসান, অধ্যাপক আ. সালাম খান প্রমুখ।
কুয়াকাটা পৌর শাখার আমির মাইনুল ইসলাম মান্নান বলেন, ‘কুয়াকাটায় যতগুলো মন্দির, বিহার রয়েছে সবগুলোর খোঁজখবর আমরা সবসময় রেখেছি। আজকের এই প্রোগ্রামটা অনেক বড় আয়োজন। তাই আমাদের এই আয়োজনও তাদের মেহমান হিসেবে রাখার চেষ্টা করেছি। তারা আমাদের প্রতিবেশী, আমাদের ভাই, আমাদেরই লোক।’
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এসআর/এমএস