অভিনব কায়দায় রেইনট্রি ‘হত্যা’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ০৪:০৭ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বাকল তুলে মেরে ফেলা হচ্ছে গাছগুলো

পার্বত্য খাগড়াছড়ির পানছড়ি আঞ্চলিক সড়কে বছরের পর বছর ধরে ছায়া দিয়ে আসছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের লাগানো রেইন ট্রি। সাম্প্রতিক সময়ে বাকল বা ছাল তুলে কৌশলে মেরে ফেলা হচ্ছে গাছগুলো। ফলে ক্রমেই বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে খাগড়াছড়ি-পানছড়ি আঞ্চলিক সড়কটি।

সম্প্রতি খাগড়াছড়ি-পানছড়ি আঞ্চলিক সড়কের ছোটনালা এলাকায় আটটি গাছের বাকল তুলে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ২০-৪০ বছর বয়সী এসব গাছের বাকল তুলে ফেলায় মাটি থেকে খাদ্য উপাদান গ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ধীরে ধীরে বৃক্ষগুলো মারা যেতে শুরু করেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে সড়কের দুই পাশে থাকা বৃক্ষগুলোকে একটি চক্র কৌশলে মেরে ফেলছে। বৃক্ষগুলো মারা যাওয়ার পর তা কেটে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটলেও দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

অভিনয় কায়দায় রেইনট্রি ‘হত্যা’

সওজের মালিকানাধীন এসব বৃক্ষনিধনের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তৌহিদুল বারী।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। পিটাছড়া বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা মাহফুজ রাসেল বলেন, খাগড়াছড়িতে বছরের পর বছর রাস্তার পাশের বর্ষীয়ান গাছগুলোকে বিভিন্ন কৌশলে মেরে ফেলে কেটে নিয়ে যাওয়া হয়। সড়ক বিভাগের নাকের ডগায় এই অপকর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাই সড়ক বিভাগের কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত।

খাগড়াছড়ির বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা বলেন, গাছের বাকল তুলে নেওয়াকে ‘গাডলিং’ বলে। একটা বৃক্ষ বা গাছ শেকড় থেকে ক্যাম্বিয়াম লেয়ারের মাধ্যমে মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। গাছের বাকল তুলে ফেললে ক্যাম্বিয়াম লেয়ার কাজ করতে পারে না। ফলে এক পর্যায়ে গাছের ডালপালা শুকিয়ে যেতে শুরু করে এবং গাছটি মারা যায়।

অভিনয় কায়দায় রেইনট্রি ‘হত্যা’

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বন বিভাগের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, তারা (বন বিভাগ) আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সবধরনের সহযোগিতা করবো।

খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, এরআগেও সড়ক বিভাগের একাধিক বৃক্ষ এভাবে বাকল তুলে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা সে সময়ে জিডি করেছিলাম কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা আমাদের জানা নেই। আমরা কোনো প্রতিকার পাইনি।

তিনি আরও বলেন, নতুন করে ছোটনালা এলাকায় আটটি বৃক্ষের বাকল তুলে নেওয়া হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না। আমি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।