চুরির অভিযোগে কিশোরের শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা, কেটে দেওয়া হলো চুল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০৬:১৩ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মুদিদোকানে চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে (১১) গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় শরীরে সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা ও চুল কেটে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

অভিযুক্তরা হলেন উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের মৃত নজির উদ্দিনের ছেলে শামসুল হক (৫০), মৃত আদু শেখের ছেলে মনোহার শেখ মুনা (৫০), মৃত আহাদ আলীর ছেলে মো. সোলাইমান (৫৫), আতিয়ার রহমানের ছেলে মো. রিফাত (২০) ও সদর থানার ফুলতলা এলাকার নুর হোসেনের ছেলে মো. জিহাদ (৩৫)। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অপরজনের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।

নির্যাতনের শিকার ওই কিশোর রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। সে একটি মাদরাসার ছাত্র।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ভুক্তভোগী কিশোর একটা সময় কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর এলাকার দারুল আহাদ আল ইসলামিয়া নুরানি হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করতো। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে সে বর্তমান মাদরাসা থেকে পালিয়ে আগের মাদরাসা আলাউদ্দিন নগরে আসে। সোমবার ভোরের দিকে টিনের বেড়া কেটে মাদরাসার পাশের সোলাইমানের মুদি দোকানে ঢুকে বিস্কুট, জুস খায় ওই কিশোর। এসময় আসামিরা টের পেয়ে তাকে ধরে প্রথমে গাছে বেঁধে ফেলেন। পরে ব্যাপক মারধর, সিগারেটের আগুন দিয়ে শরীরে ছ্যাঁকা ও চুল কেটে দেন তারা। সকাল ৯টা পর্যন্ত নির্যাতন চলে।

চুরির অভিযোগে কিশোরের শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা, কেটে দেওয়া হলো চুল

খবর পেয়ে ওই ছাত্রের মা তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে কুমারখালী থানায় মামলা করা হয়। পরে সোমবার রাতেই আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী কিশোরের মা বলেন, ‘আমার ছেলে ক্ষুধার জ্বালায় টিন কেটে দোকানে ঢুকে বিস্কুট ও জুস খেয়েছিল। এজন্য তাকে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করেছে, সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে, মাথার চুল কেটেছে। আমি এই নিষ্ঠুর নির্যাতনের সু্ষ্ঠু বিচার চাই।’

মারধর ও চুল কাটার ঘটনা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত দোকানদারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দোকানে ঢুকে চুরি করেছিল ওই কিশোর। তাকে হাতেনাতে ধরে মারধরা করা হয়েছিল। চুলে কেটেছে স্থানীয় ছেলেরা। এটা আসলে ভুল হয়েছে।

কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকল্যাণ বিশ্বাস বলেন, নির্যাতনের শিকার কিশোরের মা থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আল-মামুন সাগর/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।