গর্ভের সন্তান নষ্টের অভিযোগে মহিলাদল নেত্রীর মামলা, আসামি ৪৩৬

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৯:০২ এএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ফাইল ছবি

গর্ভের সন্তান নষ্ট ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিক্ষোভ মিছিল পণ্ড করার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শহরের আমতলা গলি সড়কের আ. কুদ্দুস হাওলাদার লেলিনের স্ত্রী মুক্তা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় এ মামলা করেন।

ঝালকাঠির পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান রসুল, আমির হোসেন আমুর এপিএস ফখরুল মজিদ কিরণ, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল মাহমুদ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করীম জাকিরসহ মোট ৯৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৩৪৩ জনের বিরুদ্ধে ঝালকাঠি সদর থানায় মামলা করেছেন তিনি।

২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবসে আসামিরা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পণ্ড করে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীদের নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট হয়েছে গেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মামলায় মুক্তা বেগম উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় ঝালকাঠি জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আইনজীবী সমিতি অতিক্রমকালে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, হকিস্টিক, জিআই পাইপ, হাতুড়ি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, লাঠিসোঁটাসহ ককটেল বোমা নিয়ে মিছিলের নেতাকর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালান। এ সময় জনমনে চরম অতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হলে আসামিরা বিএনপির নেতাকর্মীদের মারাত্মক জখম করেন। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যান। তখন আমি (মুক্তা) তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আসামিরা আমার চুলের মুঠি ধরে পেটে লাথি ও কিল ঘুষি মারেন। আমি পাকা রাস্তার ওপর পড়ে যাই। এরপর অন্যান্য আসামিরা একত্রিত হয়ে আমার পেটে বুকে লাথি মারেন ও পদদলিত করেন। আসামিদের নির্যাতনে আমার গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং আমি রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে যাই।

আসামিরা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার কিছুক্ষণ পর সাক্ষীরা আমাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। ডাক্তাররা প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকার নেতৃত্বে গুন্ডাবাহিনী হাসপাতালে গিয়ে জোরপূর্বক আমাকে জরুরি বিভাগ থেকে বের করে দেয়। আমার আত্মীয় স্বজন গোপনে বিভিন্ন স্থানে প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা করায়।

চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে জানান আসামিদের নির্যাতনে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। আমি তৎকালীন স্বৈরাশাসনের ফলে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে ঝালকাঠি সদর থানা বা আদালতে মামলা করতে পারিনি। ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আতিকুর রহমান/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।