নোয়াখালীতে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে মানুষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নোয়াখালীতে ব্যাপক বৃষ্টিতে আবারো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়তে শুরু করেছে বন্যার্ত মানুষ। পানিবন্দি হয়ে আছে সাড়ে ১১ লাখ মানুষ।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জেলার কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট, সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল এলাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে গত কয়েকদিন বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও আবারো অতিবৃষ্টিতে জেলা শহর মাইজদীসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকস্থানে বসতঘর ও রান্নাঘর পানিতে নিমজ্জিত। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকারে পৌঁছেছে।

নোয়াখালীতে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে মানুষ

নোয়াখালী শহরের গুরুত্বপূর্ণ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনের কার্যালয়সহ, আদালত পাড়া, প্রেসক্লাব, জেলা জামে মসজিদ এলাকার সকল সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে সেবা প্রত্যাশীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

আবদুর রহমান নামে এক রিকশাচালক জাগো নিউজকে বলেন, বাসায় খাবার নেই, তাই রিকশা নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু রাস্তায় এতো পানি ব্যাটারিচালিত রিকশায় পানি ঢুকে মোটর নষ্ট হয়ে গেছে। এটি ঠিক করতে অনেক টাকা লাগবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী ও মাতামুহুরী নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, গোমতী নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। অপরদিকে হালদা ও সাঙ্গু নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাসমূহের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশে এবং উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতার প্রেক্ষিতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

নোয়াখালীতে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে মানুষ

স্থানীয়রা জানান, নোয়াখালী খালের মুখ দখল করে সাবেক সরকারের প্রভাবশালীরা অবৈধ খামার, মৎস্যঘের তৈরি করে পানি নামতে বাধার সৃষ্টি করায় জেলায় এমন দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা নিজেদের স্বার্থে তখন নোয়াখালী খাল দখল করে কবিরহাটে ধানশালিক ইউনিয়নে চরআলগীর খালে পানি নামার ব্যবস্থা করলেও ওই এলাকার লোকজন ভাঙনের ভয়ে আলগী খালে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রেখেছে। যা প্রশাসন চেষ্টা করেও খুলতে পারেনি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হাসান খান জাগো নিউজকে বলেন, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে দুই হাজার ৮৩০ জন আশ্রিত লোক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আজ (শনিবার) জেলায় আশ্রিত লোকের সংখ্যা ৩৮ হাজার ২৭১জন। যা শুক্রবার ছিল ৩৫ হাজার ৪৪১ জন।

পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের কাছে নগদ ২৯ লাখ ৫১ হাজার ২৫০ টাকা, সাড়ে ৫১ মেট্রিকটন চাল, ১০ লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও ১০ লাখ টাকার গো-খাদ্য মজুত রয়েছে। এছাড়াও বন্যার্তদের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রয়োজনীয় আরও চাহিদাপত্র পাঠানো হচ্ছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।