ভুলুয়া নদীর অবৈধ বাঁধ অপসারণে হাজারো জনতা
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে আজাদনগর ব্রিজ এলাকায় অবৈধ বাঁধ অপসারণ করে ভুলুয়া নদীতে পানি প্রবাহ নিশ্চিতে কাজ করছে জনতা। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ বাঁধ অপসারণে নদীতে নামে।
মানবসৃষ্ট বন্যা রোধে ভুলুয়া নদীতে থাকা অবৈধ বাঁধ অপসারণে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাস্তবায়নে রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল্লাহ বিন শফিকের নেতৃত্বে স্বেচ্ছায় কাজ করে জনতা। এসময় জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিটকারী সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা আবদুস সাত্তার পালোয়ান উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে লক্ষ্মীপুরে ও নোয়াখালী জেলার ভুলুয়া নদী সংশ্লিষ্ট এলাকায় টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা এবং পরে বন্যার পানিতে প্রায় তিন লাখ মানুষ দুই মাস ধরে দুর্ভোগে রয়েছেন। ধীরগতিতে পানি কমলেও কাটছে না দুর্ভোগ। এখনো অধিকাংশ মানুষের বাড়ি কোমর পানিতে তলিয়ে আছে। ৪০ দিনেরও বেশি সময় ধরে মাটির চুলায় রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অধিকাংশ মানুষ শুকনো খাবার খেয়েই জীবনযাপন করে আসছে।
৪ সেপ্টেম্বর সাত্তার পালোয়ান মানবসৃষ্ট বন্যা রোধে ভুলুয়া নদীসহ লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর সব খাল থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণ চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করেন। পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর ভুলুয়া নদীসহ সব খাল দখলে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এতে ভুলুয়া নদীতে অবৈধ দখলের ঘটনা তদন্ত ও অবৈধ বাঁধ অপসারণে সময় বেঁধে আদেশ দেওয়া হয়। আদেশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবৈধ দখলের ঘটনায় তদন্ত শুরু করতে হবে। তদন্তপূর্বক ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে দখল উচ্ছেদ করে ভুলুয়া নদীর পানি প্রবাহ নিশ্চিত করে হাইকোর্টকে প্রতিবেদন দিতে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
অ্যাডভোকেট সাত্তার পালোয়ান বলেন, দুই মাস ধরে ভুলুয়া নদী এলাকায় প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি। এজন্য প্রথমেই ভুলুয়া নদী থেকে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত শেষে নদী থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণের জন্য ১০ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে হাজারো মানুষ অবৈধ বাঁধ অপসারণে কমলনগর থেকে রামগতি এসে কাজ করছে।
রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল্লাহ বিন শফিক বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা ভুলুয়া নদীতে থাক অবৈধ বাঁধসহ পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টিকারী বস্তু অপসারণে এসেছি। এখানে আমাদের সঙ্গে স্বেচ্ছায় কাজ করতে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়েছেন।
কাজল কায়েস/জেডএইচ/জেআইএম