ছাত্র আন্দোলন

আলোহীন এক চোখ, অন্য চোখে হতাশা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৬:২৯ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিছিলে গিয়ে ছররা গুলিতে এক চোখের আলো হারিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। অন্য চোখের আলোও নিভু নিভু। পরিবারে রোজগারের একমাত্র অবলম্বন শফিকুলের এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্বজনরা।

শফিকুলের বাবা ওয়াহেদ আলীও চোখে দেখেন না। ১৫ বছর আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে চোখের আরো হারিয়েছেন। প্রতিবন্ধী ভাতা আর ছেলের উপার্জনে কোনোমতে সংসার চলে তাদের। রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত একমাস নিদারুণ কষ্টে দিন কাটছে তাদের পরিবার। পরিবারের কথা চিন্তা করে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন শফিকুল ইসলাম।

আলোহীন এক চোখ, অন্য চোখে হতাশা

শফিকুল ইসলামের বাড়ি কুড়িগ্রাম পৌরসভার পাইকপাড়া গ্রামে। বাবার নাম মো. ওয়াহেদ আলী। শফিকুলের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় থাকতেন শফিকুল ইসলাম। প্রায় ১৮ বছর ধরে কখনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কখনও রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। গত ১৯ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের পর নয়াপল্টন এলাকায় ছাত্রদের একটি র‌্যালি বের হয়। সে মিছিলে যোগ দেন শফিকুল। পুলিশের ধাওয়ায় প্রথমে দৌড় দিলেও কিছুদূর গিয়ে পিছন ফিরে তাকালে ছররা গুলির স্প্রিন্টার তার ডান চোখে লাগে। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আগারগাঁও চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে সেখানে চোখের অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু ততোক্ষণে তার ডান চোখের আলো চিরদিনের জন্য নিভে যায়।

আলোহীন এক চোখ, অন্য চোখে হতাশা

পরে চিকিৎসকরা জানান, অন্য চোখকে রক্ষা করতে হলে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এমনকি বিদেশেও নিয়ে যেতে হতে পারে। অভাবের সংসারে স্বজনদের কাছ থেকে ধার দেনা করে কোনো রকমে চলছে পরিবার। সেখানে চিকিৎসা খরচ যোগাড় করা সম্ভব হয়নি।

শফিকুলের মা সখিনা বেগম বলেন, আমার ছেলের চোখ ভালো করে দেন। আমি আর আমি কিছু চাই না। চোখ ভালো হলে আমার ছেলে কাজ করে সংসার চালাতে পারবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, অভাবের সংসার শফিকুলের। ছেলেটার উপার্জন দিয়ে সংসার চলতো। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেলো। সরকারিভাবে পরিবারটিকে সহযোগিতার অনুরোধ জানাই।

ফজলুল করিম ফারাজী/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।