জয়পুরহাট
বেশিরভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক খোলে সকাল ১০টায়, বন্ধ দেড়টার আগেই!
জয়পুরহাটে ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক সময়সূচি মেনে চলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এসব ক্লিনিকে সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা তা মানছেন না। জেলার বেশিরভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক সকাল ১০টার পর খোলে। বন্ধ হয় দেড়টার মধ্যেই।সরেজমিনে জেলার ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। বে
ক্লিনিকগুলোতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পরিদর্শকদের নিয়মিত পরিদর্শনের কথা থাকলেও তারা সেই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়। ক্লিনিকে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পরামর্শসহ বিভিন্ন সেবা দেওয়ার কথা। কিন্তু অদক্ষ জনবল ও নিয়মিত তদারকির অভাবে এর মূল উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে না।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন দুপুর দেড়টার দিকে সদর উপজেলার আমদই ইউনিয়নের মাধাইনগর কমিউনিটি ক্লিনিকে গেলে দেখা যায় যে, কর্তব্যরত কর্মকর্তারা অনেক আগেই চলে গেছেন। একইদিন ১টা ২০ মিনিটে পাচঁবিবি উপজেলার আওলাই ইউনিয়নের ছাতিনালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তালা ঝুলছে।
পাঁচবিবি উপজেলার আওলাই ইউনিয়নের ছাতিনালী গ্রামের আব্দুর রহিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা দেখি তারা (স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) সকাল ১০টায় আবার কোনোদিন ১১টায় আসে, আবার ১টার আগেই চলে যায়। আমরাতো গ্রামের মানুষ বুঝিওনা যে, কটা থেকে কটা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা। তাদের কাছে গেলে তারা দু-এক ধরনের ওষুধ ছাড়া আর কিছু দেন না। বলে শেষ হয়েছে অথবা বলে নেই।’
ক্ষেতলাল উপজেলার কোড়লগাড়ি গ্রামে সেবা নিতে আসা শাহানাজ বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ওষুধ নিতে অনেক সময় পাই না। ক্লিনিকগুলোতে যেসব ওষুধ থাকার কথা সেগুলো থাকলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হতো।’
জানতে চাইলে একই উপজেলার রামপুরা চৌধুরীপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মানিক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত থাকি। মাঝে মাঝে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নানা ধরনের কাজে যাই। সেজন্য বন্ধ থাকতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের ওষুধের স্বল্পতা রয়েছে। সেগুলো পেলে ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগ আর থাকবে না।
ক্ষেতলাল উপজেলার মোনঝার দাশড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি ফজিলাতুন পারুল জাগো নিউজকে বলেন, কিছু মানুষের অভিযোগ রয়েছে সেটা আমি স্বীকার করলাম, কিন্তু তারা জানেন না ওষুধ না থাকলে কীভাবে দিবো। যখন ওষুধ পাই না, তখন কিছু মানুষ ভুল বোঝেন। তিনি নিয়মিত অফিসে বসেন বলে দাবি করেন।
জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা. রুহুল আমিন জাগো নিউজকে বলেন, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত অফিস খোলা থাকে। কেউ যদি পরে যান কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই চলে যান, তাহলে তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এছাড়া ক্লিনিকগুলোতে ২০ ধরনের ওষুধ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
আল মামুন/এসআর/জেআইএম