আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
পাঁচ লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসা দিচ্ছেন চার চিকিৎসক
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শয্যার এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা সমস্যার সঙ্গে চিকিৎসকের তীব্র সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে জানিয়েছেন রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তিন লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার পশ্চিমাংশ, উজিরপুরের উপজেলার উত্তরাংশ ও কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্বাংশের লোকজন নিয়ে অন্তত পাঁচ লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসা সেবা দেয় এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
স্বাধীনতাত্তোর সরকার ১৯৭২ সালে উপজেলার গৈলা এলাকায় ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ২০০৪ সালে ৩১ শয্যার ওই হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ডাক্তারের পদ রয়েছে ২১টি।
এছাড়াও ৫টি ইউনিয়নের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের (সাব সেন্টার) দায়িত্বে থাকার কথা রয়েছে ৫ জন ডাক্তারের। সবমিলে উপজেলায় মোট ২৬ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও ইউনিয়নের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে নেই কোনো চিকিৎসক। হাসপাতালে ২১টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৪ জন।
এরমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ডা. শিশির কুমার গাইন। এছাড়াও হাসপাতালে রয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনিচুর রহমান, ডা. মশিউর রহমান ও ডা. তরিকুল ইসলাম।
জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সবসময় প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসাসের ওপর নির্ভর করে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। চিকিৎসক সংকটের কারণে ৫টি ইউনিয়নের সাব সেন্টারগুলোতে চিকিৎসা নিতে পারছেন না রোগীরা। চিকিৎসক সংকটে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সব সমস্যা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ জেনে গেলেও কার্যত জনগণের কোনো কাজেই আসেনি। যুগের পর যুগ একাধিক চিকিৎসকের পদ শুন্য থাকলেও এই হাসপাতালে দেওয়া হয়নি কোনো চিকিৎসক।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শিশির কুমার গাইন জানান, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলে আগৈলঝাড়া হাসপাতালে ডাক্তার সংকট থাকবে না।
আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিয়া তানজিন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অচিরেই সমস্যা সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। কোনো কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে আমাদের। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত জানাচ্ছি। আশা করছি, নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলে এই সংকট কিছুটা কেটে যাবে।
শাওন খান/এফএ/এএসএম