গোমতী পাড়ে প্রতিদিন বসে ৪০০ বানভাসির মেজবানির আয়োজন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ০৮:৪১ এএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কুমিল্লার ১৪ উপজেলায় চলমান বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। পথে-প্রান্তরে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও আগুন জ্বলছে না বানভাসিদের চুলায়। ত্রাণের চিড়া, মুড়ি, বিস্কিট আর পাউরুটি খেয়েই দিন কাটছে তাদের।

তবে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা সদর উপজেলার চানপুর গোমতীর বেড়িবাঁধে গিয়ে দেখা গেছে ভিন্ন এক চিত্র। সেখানে প্রতিদিন বানভাসি ৪০০ জন মানুষকে দুই বেলা খাওয়ানো হচ্ছে মেজবানি। গত ১১ দিন ধরে চলছে এই এলাহি কাণ্ড। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ।

বেড়িবাঁধ লাগোয়া দক্ষিণ পাশে একটি টিনশেডে চেয়ার-টেবিলে মেজবানির আয়োজন করেছেন তিনি। সেখানে একসঙ্গে ১০৫ জন খাবার খাচ্ছেন। খাবার মেনুতে রয়েছে গরু, মুরগি, ডিম, মাছ, আলুভর্তা, ডাল ও ভাত।

গোমতী পাড়ে প্রতিদিন বসে ৪০০ বানভাসির মেজবানির আয়োজন

এছাড়াও বানভাসি মানুষরা সেখানে ফ্রিতে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ পাচ্ছেন। বিপদের মুহূর্তে মৌলিক দুইটি অধিকার পূরণ করায় মহাখুশি বানভাসিরা। তাদের দাবি বন্যা পরবর্তী সময়ে যেন তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করা হয়।

মেজবানিতে অংশ নেওয়া অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগেরই বন্যার পানিতে ঘর তলিয়ে গেছে। তারা এখানে দু’বেলা রান্না করা খাবার ও চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। এতে কিছুটা হলেও তারা উপকৃত হচ্ছেন। তবে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো এদের অনেকেরই পুনরায় ঘর নির্মাণ বা মেরামতের সামর্থ্য নেই। এক্ষেত্রে তারা সরকারসহ সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আবদুস সাত্তার নামে একজন জাগো নিউজকে বলেন, পানি ওঠার পর থেকেই তোফায়েল আমাদের দু’বেলা খাবার ও ওষুধ দিচ্ছেন। চিন্তার বিষয় হলো পানিতো কমতে শুরু করেছে, এরপর থাকবো কোথায়। হাতে নেই টাকা, ঘর বানাবো কী দিয়ে?

গোমতী পাড়ে প্রতিদিন বসে ৪০০ বানভাসির মেজবানির আয়োজন

মনোয়ারা আক্তার নামে এক নারী জাগো নিউজকে বলেন, তোফায়েল ভাইয়ের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। গোমতীর পানিতো কমেছে, কেউ যদি আমার ঘর মেরামতের দায়িত্বটা নিতো। কারণ ঘর মেরামত করাতো দূরের কথা, একদিন চলার মতো টাকাও নেই আমার কাছে।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, গোমতীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধার করে আমরা বাঁধে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করি। এরপর থেকে টানা ১১ দিন ধরে টিক্কারচর থেকে কাপ্তান বাজার পাকা রাস্তার মাথা পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মানুষের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিদিন রান্না করা খবার সরবরাহ করছি। খাবার মেনুতে রেখেছি গরু, মুরগি, ডিম, মাছ, আলুভর্তা, ডাল ও ভাত। পাশাপাশি এসব মানুষকে ফ্রিতে চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ করছি।

জাহিদ পাটোয়ারী/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।