সংবাদ সম্মেলনে স্বজনরা

বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র দীপ্তর মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতেই মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৯:৪৯ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্তর মৃত্যুর সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। বিনা চিকিৎসায় ৯ ঘণ্টা জরুরি বিভাগে ফেলে রাখায় মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহত দীপ্তর বাবা ও বন্ধুরা।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবিও করেন তার পরিবার।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্ত শুক্রবার ঢাকার কুর্মিটোলা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তার বন্ধুরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুর্ঘটনার পর আহত দীপ্তর মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নেয়। পরে নিলয় নামে এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বন্ধে একটি অস্ত্রোপচার ও আইসিইউ সেবা পেতে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু আইসিইউ বেড ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা বাবদ সাত হাজার টাকা দাবি করা হয়। দীপ্তর স্বজনরা না থাকায় টাকা না পেয়ে তাকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে জরুরি বিভাগের মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। পরদিন সকালে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে দুপুর নাগাদ দীপ্তর বন্ধু সঞ্জয় পাল জয়সহ কয়েকজন হাসপাতালে আসেন এবং বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। ওইদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুটি মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে তার বন্ধুদের মামলায় জড়ানো হয়।

দীপ্তর বাবা শহীদুল ইসলাম মাজু এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে ন্যায় বিচার ‘ইনসাফ’ প্রতিষ্ঠায় সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দীপ্তর বন্ধু রাশেদ স্বর্ণ বাবু। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আব্দুল্লাহ সানি ও মো. তামজিদ রায়হান প্রমুখ।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় সোমবার ভোরে গাইবান্ধা শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে সঞ্জয় পাল জয় (২৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি গাইবান্ধা শহরের মাস্টারপাড়ার বারিধারা এলাকার রঞ্জিত পালের ছেলে।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সঞ্জয় পালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে ঢাকায় সোপর্দ করা হবে।

এ এইচ শামীম/আরএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।