আশ্রয়কেন্দ্রে মেজবানি, অতিথিরা সবাই বানভাসি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৯:১১ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৪

নোয়াখালীর চাটখিলে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে মেজবানির আয়োজন করা হয়েছে। এখানে আশ্রয় নেওয়া দেড় শতাধিক বন্যার্তকে খাওয়ানো হয় মেজবানি।

শনিবার (৩১ আগস্ট) মির্জাপুর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম উচ্চ বিদ্যালয় ও সাইক্লোন সেন্টারে এ আয়োজন করা হয়। এসময় গরুর মাংস, ডাল ও সাদা ভাত দিয়ে আপ্যায়ন করা হয় বন্যার্তদের।

জানা গেছে, গত আটদিন ধরে এখানে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের জন্য চলছে খাবার রান্না। বিদ্যালয়ের আশপাশে পানি উঠায় অন্যত্র রান্না করে নৌকায় করে তা আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়।

আশ্রয়কেন্দ্রে মেজবানি, অতিথিরা সবাই বানভাসি

খাবার রান্নার দায়িত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম লেডিস ক্লাবের বাবুর্চি মো. রহমত উল্যাহ ও তার সহযোগীরা।

বাবুর্চি মো. রহমত উল্যা জাগো নিউজকে বলেন, কখনো খাসি, কখনো গরু, কখনো মুরগি আবার কখনো মাছ রান্না করা হয়। একবেলা সাদা ভাত হলে আরেক বেলা দেওয়া হচ্ছে বিরিয়ানি বা খিচুড়ি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান ভুঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, বন্যার পানি বাড়ার পর আমাদের এখানে আশপাশের মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়। প্রথম দিন থেকেই সবার জন্য বাবুর্চি রেখে রান্না করা হচ্ছে। বর্তমানে দেড় শতাধিক মানুষ আছেন আমাদের স্কুলে। স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ সর্দার আলম সুনীলের ব্যক্তিগত অর্থায়নে রান্নাসহ সব কার্যক্রম চলছে।

কেন্দ্রটিতে আশ্রয় নেওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশিরভাগেরই ঘর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। তবে আশ্রয় নেওয়া এ বিদ্যালয়ে তারা মেহমানের মতো নিরাপদে আছেন। দুবেলা রান্না করা খাবার ছাড়াও নাস্তার জন্য শুকনো খাবার এবং নারী-শিশুদের আনুষঙ্গিক জিনিষপত্র দেওয়া হচ্ছে।

আশ্রয়কেন্দ্রে মেজবানি, অতিথিরা সবাই বানভাসি

কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মো. মনা মিয়া বলেন, বন্যায় ঘরে পানি ঢুকলে পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ি। পরে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। ভালো আছি। পানি আরেকটু কমলে চলে যাবো। তবে ঘরের অবস্থা ভালো না। অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এতোগুলো আশ্রিত মানুষকে সুন্দরভাবে রেখে উন্নতমানের খাবারের ব্যবস্থা করায় সর্দার আলম সুনীলকে ধন্যবাদ জানাই।

এদিকে নোয়াখালীর সব উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে জেলা শহর মাইজদীতে এখনো রয়েছে হাঁটুপানি। এছাড়া ডুবে আছে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে পানিবন্দি মানুষ। খাল দখলের কারণে সহজে নামছে না বন্যার পানি।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আট উপজেলায় এখনো ১৯ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি। এক হাজার ২৬৯ আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো দুই লাখ ৩১ হাজার ২৬৩ জন রয়েছেন। অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রীর সঙ্গে শুকনো খাবার, নগদ টাকাসহ এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকার শিশুখাদ্যও বিতরণ করা হয়েছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।