সাবেক প্রতিমন্ত্রীর সরকারি বরাদ্দপ্রাপ্তদের তালিকা ফেসবুকে ভাইরাল

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
প্রকাশিত: ০৪:৩৯ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমানের স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে প্রতিবন্ধী-অসহায়-বন্যাদুর্গত-নদীভাঙন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দ টাকার একটি তালিকা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই তালিকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতা, বিত্তবান, ইউপি মেম্বার, প্রতিমন্ত্রীর কাছের ব্যক্তি, স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) ও সাংবাদিকদের নাম রয়েছে। এনিয়ে ফেসবুকে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে।

তালিকা দেখতে ক্লিক করুন

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সেবা) অসীম চন্দ্র বনিক সই করা গত ৯ জুনের একটি প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, ১২৩ জন ব্যক্তির অনুকূলে তাদের প্রত্যেককে ৫-১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মোট বরাদ্দের পরিমাণ সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা। তবে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের দাবি, তারা বিষয়টি অবগত না।

১২৩ জনের তালিকায় কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য অনন্ত মুখার্জি, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল ওয়ানস্টারের মালিক মাহবুব আকন, প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী, ধুলাস্বার ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার শাহ আলম, মহিপুর থানা শ্রমিকলীগের সভাপতি কালাম ফরাজি, কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী রইসুল ইসলাম শিবলু, ধুলারসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোদাচ্ছের হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফায়েল আহমেদ তপু, আলীপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ফকিরসহ সচ্ছল ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার নাম রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী এই টাকাটা মূলত ঘূর্ণিঝড় রিমাল-পরবর্তী সময়ে দিয়েছেন। তবে আমার নাম কীভাবে হয়েছে, কে দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই।’

তালিকায় নাম থাকা ধুলাস্বার ইউনিয়নের আওয়ামী কর্মী রানা জোমাদ্দার বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি কিন্তু সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমাদের বিএনপি ট্যাগ লাগিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সরিয়ে দিতেন। এই তালিকা ভাইরাল হওয়ার পর আমার নাম দেখতে পেয়ে আমি হতভম্ব! কে বা কারা আমার নাম দিয়েছে তা আমি জানি না। আমি কোনো টাকা-পয়সাও পাইনি।’

কুয়াকাটার সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘মহিববুর রহমানকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পেয়ে উপকূলীয় এলাকার মানুষ অনেক আনন্দিত হয়েছিলেন। অথচ প্রতিবন্ধীদের টাকা তিনি তার ঘরের মানুষদের দিয়েছেন। এর চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তালিকাটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরে সবাই নিন্দা জানাচ্ছেন।’

এ বিষয়ে জানতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম বলেন, এটা সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে এসেছে। তবে বরাদ্দের টাকা কে পাবেন আর কে পাবেন না সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব তার। তালিকায় যাদের নাম আছে প্রত্যেকেই টাকা তুলেছেন।

আসাদুজ্জামান মিরাজ/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।