লাইসেন্স ছাড়াই চলছে চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০৩:০৬ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২৪

লাইসেন্স ছাড়াই বছরের পর বছর চলছে চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির কার্যক্রম। নানা অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ডায়াবেটিক সমিতি পরিদর্শনে গেলে বিষয়টি উঠে আসে।

মূলত চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। আর সেজন্যই ডায়াবেটিক সমিতির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার জন্য জব্দ করে নিয়ে যাওয়া হয় সিভিল সার্জন অফিসে।

গত ২২ আগস্ট চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান শহরের সদর হাসপাতাল রোডে অবস্থিত ডায়াবেটিক সমিতি সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তবে বুধবার (২৮ আগস্ট) বিষয়টি জানাজানি হয়। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান।

পরিদর্শনকালে সিভিল সার্জন দেখেন, চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির নামে কোনো লাইসেন্স নেই। কেবল ২০২২-২৩ অর্থবছরে অনলাইনে নামমাত্র আবেদন করা আছে। যেখানে সংযুক্তি ফাইলে চালানের কপি ছাড়া আর কোনো কাগজপত্র আপলোড করা হয়নি।

লাইসেন্সের জন্য যে সকল কাগজপত্র থাকা জরুরি, সেগুলো হলো- মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র, হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবেশ ছাড়পত্র, প্রতিষ্ঠানের নামে/মালিকের নামে আয়কর প্রত্যয়নপত্র, টিন সার্টিফিকেট, পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ফিসের চালান কপি এবং ভ্যাট রশিদ।

তবে পরিদর্শনে দেখা যায়, ইসিজি কক্ষ এবং আল্ট্রাসনো কক্ষ অত্যন্ত নিম্নমানের। এগুলো অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন। এগুলো স্টোর রুমের মতো প্রতিয়মান হয়েছে। কর্তব্যরত ডাক্তারদের নামে কোনো নিয়োগ নেই। চেম্বারগুলো ছোট ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ছোট ভাই সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডায়াবেটিক সমিতির দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হওয়ায় তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।

সহসভাপতি হিসেবে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান। সহসভাপতি আজাদ মালিতা, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মহ. শামসুজ্জোহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শাহান, কোষাধ্যক্ষ আলাউদ্দীন হেলা। কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে রয়েছেন অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, অ্যাডভোকেট আকসিজুল ইসলাম রতন, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, ডা. ফকির মোহাম্মদ, হাবিল হোসেন জোয়ার্দ্দার। মনোনিত সদস্য এএইচএমএম কামাল তুহিন, সাইফুল হাসান জোয়ার্দ্দার ও আবু সাইদ মো. আহসানুজ্জামান। কমিটির গুরত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের আস্থাভাজন ও একান্ত অনুসারীরা।

এ বিষয়ে জানতে সমিতির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়া তিনি আত্মগোপনে থাকায় বাড়ি কিংবা অফিসে সাক্ষাৎ মেলেনি।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, আমি পরিদর্শন শেষে সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখেছি, কোনো কাগজ হালনাগাদ নেই। এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। এরমধ্যে হালনাগাদ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

হুসাইন মালিক/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।