মনোহরগঞ্জে পানি বাড়ায় এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে বানভাসিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ১০:৪৮ এএম, ২৯ আগস্ট ২০২৪

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বন্যার পানি বেড়েই চলেছে। এখনো প্লাবিত হচ্ছে উপজেলার নতুন নতুন এলাকা। পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে মানুষের ঘর-বাড়ি। বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বসতভিটা ছেড়ে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে দলে দলে মানুষ ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। সময় যত গড়াচ্ছে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

পানিবন্দিদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস, রাজনৈতিক কর্মী এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন কাজ করছে। বুধবার (২৮ আগস্ট) উপজেলার মৈশাতুয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা, পার্শ্ববর্তী জেলা নোয়াখালী এবং ডাকাতিয়া নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে প্রতিনিয়ত মনোহরগঞ্জে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বাড়ছে পানির উচ্চতাও। এতে উপজেলায় ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না তারা।

মনোহরগঞ্জে পানি বাড়ায় এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে বানভাসিরা

ঘরবন্দি হয়ে খাটের ওপর খাট দিয়ে কেউ কেউ বসবাস করছেন। সেখানে একমাত্র বাহন ডিঙ্গি নৌকা। অনেকেই এতে ভর করে আসছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। কেউ আবার ত্রাণের সন্ধ্যানে বের হয়েছেন নৌকা নিয়ে। গ্রামটি প্রত্যন্ত এলকায় হওয়ায় গত ৭ দিনে সরকারি-বেসরকারি কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। এতে বহু পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। পানির কারণে বন্ধ রয়েছে রান্না-বান্নাও।

সেখানে কথা হয় মাজেদা বেগমের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ঘরে থাকা চাল, হাঁস-মুরগি এবং গরু-ছাগল বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। কোনো কিছু্ই রক্ষা করতে পারিনি। সব হারিয়ে আজ কোনোমতে নিজের জান নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছি।

মৈশাতুয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহ জাহান জাগো নিউজকে বলেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে গত কয়েকদিন পানিতে বসবাস করেছি। এখন আর থাকার অবস্থা নেই। দায়ে পড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হচ্ছি।

মনোহরগঞ্জে পানি বাড়ায় এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে বানভাসিরা

মোস্তফা কামাল নামে এক ব্যক্তি বলেন, গত তিন দিনে গ্রামে পানি অনেক বেড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চেয়েছি। কিন্তু সেখানে জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে খাটের ওপর খাট দিয়ে ঘরেই বসবাস করছি।

আমেনা আক্তার নামে এক নারী বলেন, নিজ বাড়িতে পানি ওঠায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়িতে গিয়েছিলাম। মঙ্গলবার বাবার বাড়িতেও পানি উঠেছে। তাই আজ নীলকান্ত সরকারি ডিগ্রি কলেজ আশ্রয়কেন্দ্র যাচ্ছি।

মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলায় ১০৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া দুর্গম এলাকাগুলোতে যেসব মানুষ পানিবন্দি তাদের উদ্ধার এবং খাবার পৌঁছানোর জন্য সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কাজ করছে।

জাহিদ পাটোয়ারী/এফএ/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।