সড়ক বিভাজক যেন তাদের বসতবাড়ি
উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মিরসরাই ( চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ এএম, ২৯ আগস্ট ২০২৪
বন্যার পানিতে বসতঘর তলিয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভাজকে গত চারদিন ধরে অবস্থান করছেন গোলাপ বেগম। সমিতি বাজারের পাশে ছোট্ট ছাউনিটিতে গাদাগাদি করে গত চার দিন ধরে বাস করছে চারটি পরিবার।
আশপাশে আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এমন অস্বস্তিকর পরিবেশেই দিন পার করছেন তারা। পানি কমে গেলে কীভাবে নতুন ঘর তুলবেন সেই দুশ্চিন্তা এখন পরিবারগুলোর।
শুধু গোলাপ বেগম নয়, সমিতি বাজার থেকে এক কিলোমিটার উত্তরে গেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশেই ১২টি পরিবার গাদাগাদি করে গত ৫ দিন ধরে অবস্থান করছে। গত তিনদিন ওই স্থানে পানি থাকায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাদের। পরিবারগুলো ত্রাণ পেলেও খাওয়ার পানির সংকট এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অসুস্থ হয়ে পড়েছে সবাই। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় তাদের দুশ্চিন্তা কোনোভাবেই কমছে না।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বিভিন্ন উপজেলায় পানি কিছুটা কমে আসলেও এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন দুর্গতরা। এখনো বুক সমান পানিতে ডুবে আছে বন্যা কবলিত এলাকাগুলো।
মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, কমিউনিটি সেন্টার, নির্মাণাধীন ভবন সবগুলোতে বানভাসিরা অশ্রয়ে আছেন।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। সড়কের আশপাশের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শত শত গাড়ি ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না তারা।
তবে কিছু কিছু এলাকায় নৌকা, স্পিডবোট নিয়ে বানভাসি মানুষদের নিজ নিজ এলাকায় পৌঁছে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দিতেও দেখা গেছে কয়েকটি টিমকে।
পোল্ট্রি খামারি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার ফার্মে ৭ হাজার মুরগি ছিল। একটি মুরগিও বাঁচাতে পারিনি। আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ফার্মের সব জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা অনেকেই তাদের নিজ নিজ এলাকায় গেছেন বসতঘর দেখে আসার জন্য। কেউ হাঁটুপানি পাড়ি দিয়ে বাড়ি যেতে পরেছেন। অনেকেই মাঝপথ থেকে ফিরে এসেছেন। বাড়ির অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এম মাঈন উদ্দিন/এফএ/এএসএম