কাজে আসছে না কোটি টাকার সেতু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০৫:৩০ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর প্রায় পৌনে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সেতু। কিন্তু সেতুর কোনো সুফল ভোগ করতে পারছে না মানুষ। উল্টো তাদের বাঁশের সাঁকো ও নৌকার ওপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে লাখো মানুষকে।

দেখা গেছে, মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর যে সেতু রয়েছে তার কোনো সংযোগ সড়ক নেই। তাই সেতু দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। এজন্য পীরপুর-গঞ্জেরঘাট এলাকার সেতুর পাশেই করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো দিয়ে আবার পারাপারে গুণতে হচ্ছে টাকা। আর হাতিকাটা-তালতলা এলাকার বাসিন্দাদের ভরসা ছোট নৌকা।

মাথাভাঙ্গা নদী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাতিকাটা ও তালতলা গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে। এই নদীর দুই পাশে রয়েছে ১০-১৫টি গ্রাম। তবে নদী পারাপারে তাদের নেই কোনো সেতু। দুই পাশের গ্রামের মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সেতু না থাকায় কৃষি পণ্য আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না। নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি তুলে এলাকাবাসীসহ আশপাশের গ্রামবাসীরা মানববন্ধনও করেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। ফলে তাদের নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

অপরদিকে মাথাভাঙ্গা নদীর পীরপুর-গঞ্জেরঘাট অংশে প্রায় পৌনে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সেতু। এক বছর আগে নির্মাণকাজ শেষ হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতার কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি। এতে এই সেতু দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। ফলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগই রয়ে গেছে।

কাজে আসছে না কোটি টাকার সেতু

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, স্থানীয়দের দাবির মুখে পীরপুর-গঞ্জেরঘাট সড়কে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত সেতুটি নির্মাণে বরাদ্দ হয় ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ১০ টাকা। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি গঞ্জেরঘাট প্রান্তে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দরপত্রের চুক্তি অনুযায়ী সেতুটি ২০২২ সালের ১৮ আগস্টের মধ্যে নির্মাণ শেষ করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা ছিল। তবে এক বছর পরও সেতুটি চালু করা যায়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা হাতিকাটা গ্রামের বাসিন্দা সুমন হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তালতলা ঘাটে একটির সেতুর অভাব অনুভব করে আসছি। এই ঘাটের ওপর দিয়ে নৌকায় শত শত মানুষ পারাপার হয়। এতে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।

এদিকে পীরপুর গ্রামের সাইদুল ইসলাম বলেন, এই ঘাটে সেতু আছে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নেই। নদীতে সেতু থেকেও কোনো উপকার আসছে না। ফলে সেতুর পাশ দিয়ে নৌকায় করে পারাপার করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, তালতলা ঘাটের ওপর প্রায় ৯০ মিটার একটা সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ডিপিপি অনুমোদন বাস্তবায়ন হলে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আর পীরপুর স্থানে যে সেতু নির্মাণ হয়েছে। সেখানে সংযোগ জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সড়ক হয়নি। খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

হুসাইন মালিক/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।