বিদ্যুৎ ও পানি সঙ্কটে বিপর্যস্ত রাঙামাটিবাসী


প্রকাশিত: ০৫:৪৬ এএম, ০২ মে ২০১৬
ফাইল ছবি

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও পানি সঙ্কটে বিপর্যস্ত রাঙামাটির স্বাভাবিক জনজীবন। কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে নিম্নস্তরে নেমে যাওয়ায় পানির সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, এ সময়ে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর থাকার কথা ৮২ দশমিক ২৬ এমএসএল। কিন্তু বর্তমানে হ্রদে পানির লেভেল ৭৮ দশমিক ৪৬ এমএসএল। হ্রদে পানির স্তর অস্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন, পানি সরবরাহ ও নৌ চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে পানি স্বল্পতার কারণে কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রে পিক-আওয়ারে রেশনিং পদ্ধতিতে দৈনিক সর্বোচ্চ ৯০-১২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, রাঙামাটিতে সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত শহরের স্বাভাবিক জনজীবন। বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে শহরে পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ।
 
স্থানীয় লোকজন জানান, রাঙামাটি সদর এলাকাসহ জেলার সবকটি উপজেলার টিউবওয়েল অকেজো। শুস্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদসহ ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় জেলার কয়েক হাজার রিংওয়েল ও টিউবয়েল অকেজো হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সেসব রিংওয়েল ও টিউবওয়েল থেকে কোনো রকম পানি উঠছে না।

রাঙামাটি সদরের বন্দুভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরুণ কান্তি চাকমা জানান, বর্তমানে তার গোটা ইউনিয়নে তীব্র পানির সঙ্কট। ইউনিয়ন এলাকার সবগুলো রিংওয়েল ও টিউবওয়েল অকেজো। ছড়া, ঝরণা ও ঝিরির পানিও শুকিয়ে গেছে। পানির অভাবে ইউনিয়নের উঁচু পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী কয়েক গ্রামের মানুষকে এলাকা ছেড়ে নিচু ভূমিতে আশ্রয় নিতে হয়েছে। মোন আদাম, পলাদ আদা, কড়ল্যাছড়িসহ কয়েক গ্রামের অধিবাসীরা এখন পানির অভাবে এলাকাছাড়া।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কাপ্তাই হ্রদে অতিরিক্ত পানি কমে যাওয়ায় শহরের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট দিয়ে হ্রদ থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ নিয়মিত পানি সরবরাহ দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে শহরে পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

রাঙামাটি শহরে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ গ্যালন। কিন্তু এ পানির চাহিদা মেটাতে দারুণভাবে হিমশিম খেতে হচ্ছে জনস্বাস্থ্য বিভাগকে। অন্যদিকে পানির অভাব দূর করতে পাহাড়ি গ্রামীণ এলাকার মানুষ নিচু ভূমিতে গর্ত করে নিসৃত পানি সংগ্রহ করছে অতিকষ্টে। কিন্তু সংগ্রহ করা সেসব পানি ব্যবহারে পাহাড়ি এলাকার মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।